“অসহায় এক বোনের হৃদয়ের আকুতি”

ওয়ারেন : এক অসহায় বোন ফোন করে  আকুতি করে বলল “তুইতো এখন লিখালিখি করিস, আমার ভাইটির জন্য ফেইসবুকের মাধ্যমে  সবাইর কাছ থেকে দোয়া চেয়ে নিস।  জানিয়ে দে আমার ভাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সবাইকে আমার ভাইটার জন্য দোয়া করতে বলবি।”

পরপর ২য় দিন “কেঁদে কেঁদে বলল আমার ভাইটা লাইফ সাপোর্টে। খিচুরী খেতে চেয়েছিল, ওর বউকে একটু খিচুরী বানিয়ে আনতে অনুরোধ করেছিল, কিন্তু খিচুরী নিয়ে যাবার আগেই চলে যেতে হলো লাইফসাপোর্টে।” ৩য় দিন কিছুটা শান্ত গলায় বলল” সবার দোয়া আল্লাহ বোধহয় কবুল করেছেন। ডাক্তার বলেছে, ৮৫% ঝুঁকি থেকে ৬৫% ঝুকিতে আছে। যখন ৪৫% ঝুকিতে চলে আসবে আমার ভাই লাইফসাপোর্ট থেকে বের হয়ে আসবে।”

চতুর্থ দিন আবার কান্না কন্ঠে বলল” ডাক্তার বলেছে ৪৫% ঝুঁকিমুক্ত হলেও লাইফসাপোর্ট থেকে কিন্তু ওর কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। এক সপ্তাহ  পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, এরমধ্যে সাড়া না মিললে লাইফসাপোর্ট খুলে ফেলবে। তারপর বোনটি বিদেশের সব টেক্সি চালককে সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ করলো। সে বলল “আমি চাইনা আমার ভাইয়ের মতো আর কেউ এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হোক।”

এতক্ষণ যে ভাইটির কথা লিখছিলাম সে ছিল আমার পাড়ার ভাই। একই পাড়ায় আমাদের বেড়ে ওঠা। সে ছিল খুব সুন্দর একটা ছেলে। আমরা তাকে সালমান শাহ নাম দিয়েছিলাম। ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রেমিক ছিল। ভাই- বোনদের ছোট অনেক আদরের ভাই ছিল সে। ওর ছোট বোন আদর করে মুখে তুলে ভাত খাওয়াতো, যা কি-না আমার নিজের চোখে দেখা। সেই ছেলেটির নাম “খালেদ”

খালেদ ছিল অত্যন্ত ভাল একটা ছেলে। বিনয়, নম্রতা, ভদ্রতা ইত্যাদি সবকিছুই ওর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। পাড়ার ছোট থেকে বড় সবাই খালেদকে পছন্দ করতেন, ভালবাসতেনও বটে। 

খালেদ লন্ডনে টেক্সি চালাক ছিল। এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রী আনা -নেওয়া করতো। একদিন এক যাত্রীকে এয়ারপোর্ট থেকে তুলে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। ঘরে  ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই  শ্বাস কষ্ট অনুভব করতে লাগল। অবশেষে  অক্সিজেনের জন্য হাসপাতাল যেতে বাধ্য হলো। সিলেট হাউজিং এস্টেটের ছোট্ট খালেদ আজ সেই হাসপাতালে মুত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ভাবতে বড় কষ্ট হয়।

সংগৃহীত