বিনয়ী প্রশাসন, আত্মঘাতী জনগণ

ছাতক প্রতিনিধি: অনুরোধ একটাই 'বাবারা, ঘরে ফিরে যাও। বেঁচে থাকলে রোজি-রোজগার করার অঢেল সময় পাবে। কিন্তু ভয়াবহ করোনা ছড়িয়ে পড়লে বাঁচার সম্ভাবনা কম, তাই ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসটি যাতে ছাতকে না ছড়ায় সেই নিয়ম মেনেই আমাদেরকে চলতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর সচেতন থাকতে হবে। যতটা সম্ভব ঘর থেকে বের হওয়া চলবে না এবং রাস্তায় ভিড় করা যাবে না।' এভাবেই নিজের হাতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে বাজারে বাজারে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির। তার এই করজোড় অনুরোধে টনক নড়ে উৎসুক জনতার তৎক্ষণাৎ তারা ভিড় ভেঙে ছুটেন নিজ ঘরের দিকে। কিন্তু পরক্ষণেই আবারো মানুষের জটলা এ যেন চোর-পুলিশ খেলা। স্বেচ্ছায় যেন আত্মঘাতী হয়ে তারা কভিড-১৯ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায়। সারাদিনের নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘সারাদিন সেনাবাহিনী, পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ছাতকের মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করলাম, কোথাও কোথাও ভালো সাড়া পেয়েছি। অনেকে জায়গায় ফিরে আসামাত্র আবার নিজের মতো। মনে হলো যাহা বায়ান্ন তাহাই তিপ্পান্ন। আজকের একটি দিন আপনার বহুকাল মনে রাখা লাগতে পারে। কথায় আছে সময়ের এক ফোড় অসময়ের দশ ফোড়। অনেক মানুষকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন রোগী দেখতে অথবা আত্মীয় বাড়ি যাচ্ছেন। যেতে চান কয়দিন পড়ে যান সবার আগে আপনার সুস্থতা জরুরি। অনেকেই জানান নামাজে যাচ্ছি, যান খুব ভালো কিন্তু সামাজিক দূরত্ব মেনে ইবাদত বন্দেগী করা খুব জরুরি। ইতোমধ্যে যে নির্দেশনা ইসলামি ফাউন্ডেশন আপনাদের দিয়েছে তা মানছেন তো, রাষ্ট্রীয় আইন মানাও কিন্তু মুমিনের কর্তব্য। অনেকই খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত, খুব ভালো কথা তাই বলে দলে দলে শত মানুষ একসঙ্গে চায়ের দোকানে, মুদি দোকানে একসঙ্গে আড্ডা আর ভালো লাগে না প্লিজ প্লিজ একবার ভাবুন তো যেসব জায়গায় করোনা রোগী মারা গেছে সেখানে কিন্তু তাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব পাওয়া যায় নাই। আমার আপনার অবস্থা যদি সেরকম হয় আমাদের ক্ষেত্রেও তাই হবে। নিজে ভাইরাসমুক্ত থাকেন অন্যকে বাঁচাতে সহায়তা করেন।