আইএমএফের প্রতিবেদন: অর্থনীতির দুই ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে

অর্থনীতি ডেস্ক:বাংলাদেশের অর্থনীতি দুটি বড় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই বিকশিত হচ্ছে। এর একটি হল প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং অন্যটি তৈরি পোশাক রফতানি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির এই দুটি ভিত্তিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ধাক্কা লাগবে দেশের অর্থনীতিতে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করা হয়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত আইএমএফের প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করা হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা নিয়ে আইএমএফ নিয়মিতভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক অবস্থাও রয়েছে। এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সীমিত আকারে লকডাউন চলছে। ফলে মানুষের চলাচল যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি পণ্যের সরবরাহেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। এতে জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে উৎপাদন খাতে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির দুটি প্রধান চ্যানেলের একটি হচ্ছে রেমিটেন্স। এর মধ্যে মধ্যপাচ্যের দেশগুলো থেকে আসে ৫৮ শতাংশ রেমিটেন্স। ওই সব দেশে এখন করোনার মহামারী চলায় অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। সব মিলে প্রায় ৫ লাখ শ্রমিক ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন। ফলে তারা যেমন রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন না, তেমনি বিদেশে যারা রয়ে গেছেন তারাও কাজের ক্ষেত্র সংকোচিত হয়ে পড়ায় রেটিন্সে পাঠাতে পারবেন না। ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মোট জিডিপির আকারের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে রেমিটেন্স। ফলে জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান কমে যাবে। এছাড়া জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় উপসাগরীয় দেশগুলোতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হবে। এর প্রভাব পড়বে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের রফতানির ৫৪ শতাংশ হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ পোশাক রফতানি হয় আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে। এ অঞ্চলে চলছে এখন করোনাভাইরাসের মহামারী। ফলে ওই সব দেশে এখন যেমন পোশাক রফতানি বন্ধ, তেমনি নতুন আদেশও আসছে না। এ অবস্থায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের রফতানির আদেশ বাতিল হয়েছে। এতে এক হাজারের বেশি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।