কাবুলফেরত ৬ বাংলাদেশির পরিবারে স্বস্তি

চরম দুশ্চিন্তার অবসান ঘটেছে কাবুলফেরত ৬ বাংলাদেশির পরিবারে। আফগান পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পর থেকেই পরিবারগুলো স্বজনদের সুস্থতার সঙ্গে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। আফগানিস্তানের মোবাইল ফোন অপারেটর আফগান ওয়্যারলেসে কাজ করতেন ওই ছয় বাংলাদেশি। বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণের পর তাদের ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। দু’দিন অপেক্ষার পর মার্কিন বিমান বাহিনী তাদের কাবুল থেকে বের করে আনে। তাদের উদ্ধার করে কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন এয়ার বেসে রাখা হয়। ছয় প্রকৌশলী হলেন- রাজীব বিন ইসলাম, মো. কামরুজ্জামান, মো. নজরুল ইসলাম, ইমরান হোসাইন, আবু জাফর মোহাম্মদ মাসুদ করিম ও শেখ ফরিদ উদ্দিন। সেখান থেকে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই হয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরেন। ওই প্রকৌশলী দলের একজন রাজীব বিন ইসলাম মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় পৌঁছার পর বলেন, মৃত্যুকূপ থেকে নিরাপদে ফিরতে পেরেছি। এ জন্য আমরা খুবই খুশি। আমাদের পরিবারের উৎকণ্ঠাও দূর হয়েছে। আমাদের ফেরার পথে যারা যেভাবে সাহায্য করেছেন প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন ১৫ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ১২ জন শনিবার দুই দফায় মার্কিন বিমান বাহিনীর সহায়তায় কাতারে পৌঁছান। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাকি ৩ জন কাবুলে অবস্থান করছিলেন। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস জানান, দোহায় অবস্থানরত ৬ বাংলাদেশি ফিরছেন শিগগিরই। অন্য ৬ বাংলাদেশি এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থীর বাংলাদেশে ফেরার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও এমনটাই জানান। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ব্যবস্থাপনায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে গত বৃহস্পতিবার ১৫ বাংলাদেশির একসঙ্গে দেশে ফেরার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে ফেরার কথা ছিল চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ১৬০ জন আফগান শিক্ষার্থীরও। বুধবার দুপুর থেকে তারা কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যায় কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে ঘটে ভয়াবহ জোড়া বিস্ফোরণ। এতে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সবাই খুঁজেন নিরাপদ আশ্রয়। উল্লেখ্য, দেশে ফেরা ওই ছয় প্রকৌশলী গত ১৬ই আগস্ট ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে আগের দিন অর্থাৎ, ১৫ই আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের কাবুল দখল করার পর তাদের ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২৬শে আগস্ট তাদের কাবুল ছেড়ে আসার কথা ছিল।