উহান থেকে বাংলাদেশিদের এখনই ফেরানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সরকারের প্রস্তুতি থাকলেও চীনের নিষেধাজ্ঞা কারণে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান থেকে এখনই বাংলাদেশিদের ফেরানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রায় পাঁচশ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকে উহানে। তাদের কেউ যদি স্বদেশে আসতে চায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা সেজন্য প্লেনও রেডি করেছি। তবে আমরা চীনা সরকারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা বলেছে যে, আগামী দুই সপ্তাহ বা কমপক্ষে ১৪ দিন ওদেরকে আসতে দেবে না। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশের আবেদনেও চীন সরকার একই রকম সাড়া দিয়েছে। তাদের ওখানে পুরোপুরি শাটডাউন, কোথাও যেতে দেয় না। কোথাও নিয়ে গেছে মার্কেটে বাজার করার জন্য, আবার নিয়ে এসেছে। তারা বলেছে, ১৪ দিন তারা কোনো দেশের লোকদের ওই এলাকা ছাড়তে দেবে না। মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে গত বছরের শেষ দিনে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সপ্তাহখানেক আগে রাজ্যের সব গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। কেউ কেউ শহর ছেড়ে গেলেও অনেকে সেখানে কার্যত অবরুদ্ধ। নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪ হাজার ৫১৫ জন, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে হুবেই প্রদেশের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের বাস চলাচল একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছে চীন সরকার। হুবেই থেকে যারা বেইজিং বা সাংহাইতে যাচ্ছেন, তাদের ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। আটকে পড়াদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। তবে উহানে থাকা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য খোলা ‘ওয়েবপেইজের’ মাধ্যমে ২৪৫ জনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীন সফরের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চীন ও আশেপাশের দেশ থেকে আগতদের বিষয়ে বাংলাদেশ সতর্ক রয়েছে। যারাই ওইসব এলাকা থেকে আসবে, তাদেরকে আমরা মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখব। তাদের নাম-ঠিকানা রাখব, তারা কোথা থেকে আসছেন, কোথায় যাচ্ছেন। যাতে কোনো কিছু ঘটলে আমরা বলতে পারি, কি কারণে ঘটল।