ডা. জাফরুল্লাহ’র করোনা পজিটিভ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার রাতে যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রেস সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজ বাসায় আইসোলেশনে আছেন। রোববার বিকালে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তিনি বর্তমানে সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন এবং দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীগ ণমাধ্যমকে বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট দিয়ে পরীক্ষা করে তিনি সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। শরীরে জ্বর জ্বর ছিল, আমাদের কিট দিয়ে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে পজিটিভ এসেছে। ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট কিট’ নামের ওই র‌্যাপিড টেস্টিং কিট এখনও সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পায়নি। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কেবল রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) পদ্ধতিতেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার পরীক্ষার অনুমতি রয়েছে, যা বিশ্বে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। এদিকে করোনা শনাক্তে নিজেদের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে নমুনা পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। মঙ্গলবার থেকে গবেষণার জন্য তারা এ কার্যক্রম শুরু করবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নমুনা সংগ্রহের কথা জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড ১৯ রেপিড ডট ব্লট কিট প্রকল্পের সমন্বয়কারী মুহিব উল্লাহ খোন্দকার বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান। তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) অনুমোদিত জিআর কোভিড ১৯ র‍্যাপিড ডট ব্লট কিটের অভ্যন্তরীণ গুণগত মান পরীক্ষার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অংশ হিসেবে কাল মঙ্গলবার নমুনা সংগ্রহ করবে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ১ হাজার ৯৭৫ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। দেশে করোনায় শনাক্তের সংখ্যার হিসাবে এটিই সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশে মোট কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হলেন ৩৩ হাজার ৭১২ জন এবং মারা গেলেন ৫০১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৩৩ জন এবং মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৩৩৪ জন। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫৪১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৪৫১ টি নমুনা পরীক্ষা করে পরীক্ষা করে ১ হাজার ৯৭৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২১ জন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৩৩ জন এবং মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৩৩৪ জন। ডা. নাসিমা আরও জানান, শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০.৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৪১ শতাংশ। তিনি জানান, মারা যাওয়া কোভিড রোগীদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জন ও রংপুর বিভাগের একজন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১-৬০ বছরের ৯ জন, ৪১-৭০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন। এর আগে গতকাল রোববার সর্বোচ্চ ২৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। সেদিন ১ হাজার ৫৩২ জন শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। প্রসঙ্গত গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগীশনাক্ত হন ৮ মার্চ এবং এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। ২৫ মার্চ প্রথমবারের মতো রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানায়, বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে কমিউনিটিট্রান্সমিশন বা সামাজিকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে।