মৌলভীবাজারে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত, আক্রান্ত ছাড়িয়েছে পাঁচশো

দিনে দিনে সংক্রামণ বাড়লেও সাধারণ মানুষ যেন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে মৌলভীবাজারে। করোনার হটস্পট শহরে এখন মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা শ্রেণির মানুষ। সামাজিক দুরত্ব বজায় না রাখা, যেন নিয়মেই পরিণত হয়েছে। সরেজমিনে মৌলভীবাজার শহরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়। শহরে এখন অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার না করে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। আবার বাজারে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখলেও সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়টি উপেক্ষিত। শহরের কোর্ট রোডের একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছেন ১০ থেকে ১৫ জন গাড়ি চালক। অনেক যাত্রী যেমন স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছেন না, তেমনি পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা রয়েছে। সর্বত্রই যেন আইন না মানার প্রবণতা। কেন সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, তাদের কাছে জানতে চাইলে একজন বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তিনি নিজে কেন মাস্ক ব্যবহার করেন নি? তিনি বলেন, মাস্ক গাড়িতে রেখেছি, গরমের জন্য পরি না। মৌলভীবাজার জেলার সর্বোচ্ছ করোনা সংক্রামণের এলাকা হয়ে উঠেছে জেলা শহর। সাধারণ ছুটি প্রত্যাহারের পর সাধারণ মানুষ জীবণ আর জীবিকার তাগিদে যাচ্ছেন যার যার কর্মস্থলে। লকডাউন প্রত্যাহারের পর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু এখনও উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান বলেন, লকডাউনের ঘোষণা আসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। লকডাউন ঘোষণার পর আমরা জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সিভিল সার্জন ও পৌরসভা সবাই সম্মিলিত ভাবে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে পদক্ষেপ নেই। পৌর এলাকায়ও দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেরে চলছে। যারা আক্রান্ত হয় তাদের হোম কোয়ারেন্টাই নিশ্চিয়তার জন্য আমরা যা যা করা দরকার সেই কাজ করি। প্রয়োজনে ঘরে খাদ্যও পৌছে দেই। জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রতিদিন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত আছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় ১০ মার্চ থেকে এপর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২২জন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৯জন, রাজনগরে ৩৭, কুলাউড়ায় ৯৮জন, বড়লেখা ৪৯জন, কমলগঞ্জের ৫৭, শ্রীমঙ্গল ৫৪জন, জুড়ি ৫২ জন ও জেলা সদর হাসপাতালে ১৬৬জন। সুস্থ হয়েছেন ২৬৪জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৫জন। এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তওহীদ আহমদ বলেন, গত তিন মাসের তুলনায় মৌলভীবাজারে দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু রাস্তাঘাটে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষ এখনও মাস্ক ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী হাত ধৌত করছেন না। আবার কিভাবে হাসি কাশি দিতে হবে, সেই বিষয়টিও মানছেন না। সবচেয়ে দু:খের বিষয় করোনা আক্রান্ত ব্যাক্তিও কোয়ারেন্টাই মানছেন না। তাই করোনা সংক্রামণ ঠেকাতে এখন সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।