রেকর্ডগড়া জয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারাল আয়ারল্যান্ড

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর ঘরের মাঠে প্রথম হারের স্বাদ পেল ইংল্যান্ড। আর রেকর্ডগড়া জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড। মঙ্গলবার সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ডের দেয়া ৩২৮ রানের লক্ষ্য ৭ উইকেট ও ১ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় আইরিশরা। পল স্টার্লিং ও অ্যান্ডি বালবার্নির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ায় নিজেদের নতুন রেকর্ড গড়ল তারা। আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। ২০১১ বিশ্বকাপে জিতেছিল ৩২৭ রান তাড়া করে। এবারের মতো সেবারও ৩২৯ রান করেছিল আয়ারল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ডকে ভাল শুরু এনে দেন পল স্টার্লিং। আগের দুই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ স্টার্লিং প্রথম থেকেই খেলছিলেন বড় শট। অন্যপ্রান্তে উইকেট আগলে রেখে খেলছিলেন গ্যারেথ ডেলানি। তাকে বোল্ড করে ৫০ রানের জুটি ভাঙেন ডেভিড উইলি। অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি নামেন তিন নম্বরে। আগের দুই ম্যাচে তিনিও সুবিধা করতে পারেননি। তবে এদিন শুরু থেকেই ছিলেন স্বাচ্ছন্দ। স্টার্লিং আর বালবার্নির সঙ্গেই মূলত পেরে উঠেনি স্বাগতিকরা। কুঁচকির চোটের জন্য ফিল্ডিংয়ে ছিলেন না ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান। তার অনুপস্থিতিতে মাঠে অধিনায়কত্ব করা মঈন আলি এই জুটি ভাঙার পথ পাচ্ছিলেন না। ২৬৪ রানের মাথায় রান আউটে কাটা পড়েন স্টার্লিং। ভাঙে ২১৪ রানের জুটি। আইরিশ ওপেনারের ১২৮ বলে ১৪২ রানের ইনিংসটি সাজানো ৬ ছক্কা ও ৮ বাউন্ডারিতে। স্টার্লিং-বালবার্নির দ্বিতীয় উইকেটে ২১৪ রান আয়ারল্যান্ডের সেরা জুটি, যে কোনো জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ও কেভিন ও’ব্রায়েনের ২২৭ এখনও সেরা। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি অধিনায়ক বালবার্নি (১১২ বলে ১১৩)। শেষ ৫ ওভারে ৪৪ রানের সমীকরণ মিলিয়ে ওয়ানডে সুপার লীগে দলকে পয়েন্ট এনে দেন হ্যারি টেক্টটর ও কেভিন ও’ব্রায়েন। ২৬ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন টেক্টর। একটি করে ছক্কা ও চারে ও’ব্রায়েন করেন ১৫ বলে ২১ রান। এর আগে রোজ বোলে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আবারো ব্যর্থ ইংলিশ ওপেনিং জুটি। ১৪ রানের মাথায় বিদায় নেন জেসন রয় (৪ বলে ১) ও জনি বেয়ারেস্টো (৭ বলে ৪)। তিনে নামা জেমস ভিন্সও (১৮ বলে ১৬) ফেরেন দ্রুতই। ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন অধিনায়ক এউইন মরগান ও টম ব্যান্টন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন দু’জন। ৩৯ বলে ফিফটি ও ৭৮ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্দশ সেঞ্চুরি তুলে নেন মরগান। ৮৪ বলে ১৫ চার ও চার ছক্কায় ১০৬ রান করে ইংলিশ অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে ১৪৬ রানের জুটি। এরপর ধস নামে ইংল্যান্ড ইনিংসে। ৫১ বলে ৫৮ রান করে ফেরেন ব্যান্টন। দ্রুতই ফেরন সহ-অধিনায়ক মঈন আলী (৫ বলে ১) ও স্যাম বিলিংস (১৮ বলে ১৯)। অষ্টম উইকেটে টম কারানকে সঙ্গে নিয়ে ৬২ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন ডেভিড উইলি। ৪২ বলে ৫১ রান করে ফেরেন উইলি। কারানের অপরাজিত ৫৪ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে ইংল্যান্ড পায় ৩২৮ রানের বড় স্কোর। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড: ৪৯.৫ ওভারে ৩২৮ (রয় ১, বেয়ারস্টো ৪, ভিন্স ১৬, মরগান ১০৬, ব্যান্টন ৫৮, বিলিংস ১৯, মঈন ১, উইলি ৫১, কারান ৩৮*, রশিদ ৩, মাহমুদ ১২; ইয়াং ১০-১-৫৩-৩, অ্যাডায়ার ৭-০-৪৫-১, লিটল ৮.৫-০-৬২-২, ক্যাম্পার ১০-১-৬৮-২, ম্যাকব্রাইন ৮-০-৬১-০, ডেলানি ৬-০-২৯-১) আয়ারল্যান্ড: ৪৯.৫ ওভারে ৩২৯/৩ (স্টার্লিং ১৪২, ডেলানি ১২, বালবার্নি ১১৩, টেক্টর ২৯*, ও’ব্রায়েন ২১*; উইলি ১০-১-৭০-১, মাহমুদ ৯.৫-০-৫৮-০, কারান ১০-০-৬৭-০, মঈন ৭-০-৫১-০, রশিদ ১০-১-৬১-১, ভিন্স ৩-০-২০-০) ফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী সিরিজ:২-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ড জয়ী ম্যান অব দা ম্যাচ: পল স্টার্লিং ম্যান অব দা সিরিজ: ডেভিড উইলি