আখালিয়ায় পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া

সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যু প্রতিবাদ এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আবারও সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় লোকজন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের আখালিয়া এলাকায় রায়হানের বাড়ির সামনে অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এসময় পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করলে পুলিশকে ধাওয়া দেন উত্তেজিত জনতা। স্থানীয়া জানান, রায়হানের খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত এসআই আকবরসহ পুলিশ সদস্যদের দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবিতে বিকেল ৪টার দিকে রায়হানের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও স্থানীয়রা আখালিয়া এলাকায় রায়হানের বাড়ির সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক রাস্তা অবরোধ করেন এবং টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। এ সময় সড়কের দুই পাশে শতশত গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ধাওয়া করেন। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে সেøাগানও দেন বিক্ষোভকারীরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় মুরুব্বিগণ এবং স্থানীয় কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দ্রæত গ্রেপ্তার করা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি দেবেন। এ বিষয়ে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অকিল উদ্দিন বলেন, ‘উত্তেজিত জনতা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটা একেবারেই বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। এই ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’ সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের সিলেট মিররকে বলেন, ‘কে বা কারা পুলিশকে ধাওয়া করেছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কোনো কিছুই তো আইনের অনুসন্ধানের বাইরে নয়। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হলে জানানো হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে তাঁর পরিবার। পরদিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে কল করে টাকা চাওয়া হয়। এ ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায়। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যেখানকার কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। পরদিন রবিবার রাতে রায়হানের স্ত্রী নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত¡াবধানে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় সোমবার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।