মাধবপুরে শিক্ষা উপরকরণ বিক্রির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষা উপরকরণ বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য প্রদীপ সরকার বাদি হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন- প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাজেট (২০১৯-২০২০) স্লীপফান্ড-এর অধিনে বাংলাদেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের ন্যায় দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ল্যাব সামগ্রী, ঘড়ি, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার জার্সি, বঙ্গবন্ধুর জীবনি বই, স্যাভলন, সাউন্ড বক্স, ডাস্টবিনসহ বিভিন্ন ধরণের উপকরণ ক্রয়ের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। বরাদ্দ আসার পর পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করে গত ১২ মে প্রধান শিক্ষক বিজয় আচার্য্যরে কাছে হস্তান্তর করেন। পাশাপাশি মালামাল ক্রয়ের ভাউচার মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রধান শিক্ষক বিজয় আচার্য মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতেন। এক পর্যায়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক বিজয় আচার্য স্লীপফান্ডের ক্রয়কৃত ২ বস্তা বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে ১টি বস্তায় রাখা প্রায় ৪০ হাজার টাকার বিভিন্ন উপকরণ এবং স্কুলের ল্যাপটপ, প্রজেক্ট ও শিক্ষা উপকরণ নিয়ে যান। যার মূল্য প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা হবে। পরে তিনি মালামালগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেন। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে, মামলাটি আমলে নিয়ে মাধবপুর থানাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মামলার বাদি প্রদীপ সরকার বলেন- পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ আমাকে মালামাল ক্রয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি সভাপতি, সহ সভাপতি ও সদস্যদের উপস্থিতিতে মালামাল ক্রয় করে প্রধান শিক্ষকের কাছে হস্তান্তর করি। কিন্তু তিনি মালামালগুলো স্কুল থেকে নিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এ কারণে আমি মামলাটি দায়ের করেছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বিজয় আচার্য বলেন- করোনার সময় স্কুল দীর্ঘ মেয়াদি বন্ধ থাকার কারণে ল্যাপটপটি আমার বাসায় নিয়ে আসি। তবে কোন উপকরণ আমি বিক্র করিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্মল ইন্দু সরকার বলেন- ‘প্রধান শিক্ষক বিজয় আচার্য শিক্ষা উপকরণগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমরা পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাস করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান জানান- এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করছেন। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি স্কুল পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। উল্লেখ্য, এর আগেও নিজের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ৭০ জন শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেয়ার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল।