কুলাউড়ায় মাদকসেবীর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ স্থানীয়রা

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুলাউড়া গ্রাম এলাকায় এক মাদকসেবীর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে থানার এসআই সনক কান্তি সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার কাছে জোর দাবি জানান। জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুলাউড়া গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী নওয়াব আলী চৌধুরীর বাসার দেখভাল করেন তার বোন দিলারা বেগম চৌধুরী। কুমিল্লার বাসিন্দা রিপন আহমদ চায়না পরিবার-পরিজন নিয়ে এই বাসায় ভাড়া থাকেন। প্রায় রাতেই মদ খেয়ে বাসার সামনে এসে মাতাল হয়ে চিৎকার করেন চায়না। তার চিৎকারে আশেপাশের কেউ ঘুমাতে পারেন না। গত ১ বছর ধরে তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তিনি বাসা ছাড়ছেন না। চায়নার কাছে বাসা ভাড়া এবং বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পান দিলারা বেগম। একাধিকবার বলার পরও চায়না বাসাও ছাড়ছেন না এবং টাকাও পরিশোধ করছেন না। উল্টো দিলারা বেগমকে মামলা-হামলাসহ নানা ধরণের হুমকি-ধমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা রাজুল আহমদ দুলাল ও সুলাব আহমদসহ উপস্থিত কয়েকজন বলেন, রিপন আহমদ চায়না পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান। কিন্তু এই পেশায় কি এমন আলাদিনের চেরাগ আছে যে চায়না ও তার ভাই ৫ লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেলে চড়ে বেড়ায়। তার কক্ষে এয়ারকন্ডিশনারসহ রয়েছে দামি দামি সব ফার্নিচার। অপরিচিত লোকজনসহ দামি দামি গাড়ি, মোটরসাইকেল রাত-বিরাতে চায়নার বাসায় আসা-যাওয়া করে। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, প্রায় রাতেই চায়নাকে রাস্তায় মদ খেয়ে মাতলামি করতে দেখা যায়। মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজে জড়িত রয়েছেন তিনি। রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় মেয়েদের আপত্তিকর কথাবার্তা বলে বিরক্ত করেন চায়না। রাত-বিরাতে বহিরাগত মাদকসেবীদের নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করেন চায়না। তিনি জোরপূর্বক দিলারা বেগমের বাসা দখল করে আছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে তার সখ্যতা এবং ওঠা-বসা আছে এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন তিনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রিপন আহমদ চায়না মুঠোফোনে জানান, একদিন তিনি মদ খেয়ে কিছুটা মাতলামি করেছেন। স্থানীয় কয়েকজনকে বিদ্যুৎ লাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে বেডমিন্টন খেলার সুযোগ না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এসব বলা হচ্ছে। কুলাউড়া থানার এসআই সনক কান্তি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বাসার মালিকসহ স্থানীয় লোকজন চায়নার বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন। তাৎক্ষণিক বাসায় গিয়ে চায়নাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।