ছাতক-দোয়ারাবাজারে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে

সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাতক-দোয়ারাবাজারে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি আধুনিকায়নে ৮শ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিকে আধুনিকায়ন করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হবে। এটি বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করবে। দোয়ারাবাজার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার নদীভাঙন রোধে ১৯১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৩ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৩ সাল নাগাদ এই কাজ সম্পন্ন হবে। এছাড়া সুরমা নদীর ১৮ কিলোমিটার নদীর ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ চত্বরে পাউবো আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ছাতক-দোয়ারাবাজারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ১৯৬৯৬ সাল পর্যন্ত এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। বেগম খালেদা জিয়া ছাতকের সুরমা নদীতে দুইপাড়ে দু'টি খাম্বা স্থাপন করে সেতু নির্মাণের নাটক করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া। কিন্তু ছাতক-দোয়ারাবাজারবাসীকে ধোঁকা দিয়ে তিনি ভোটের রাজনীতি করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেতুর ডিজাইন পরিবর্তন করে সেতুর কাজ শুরু করে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন হবে এবং জুন মাসে সেতু উদ্বোধন করা হবে। তিনি আরও বলেন, ছাতক-দোয়ারাবাজারে ১১১ কোটি ব্যয়ে ১১টি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দোয়ারাবাজার উপজেলায় উচ্চশিক্ষার জন্য মাত্র ১৬টি হাইস্কুল ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আরও ৫০টি হাইস্কুল স্থাপন করেছে। এই সরকারের আমলেই দুই উপজেলায় ১৯টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। চারদলীয় জোট সরকার বাংলাদেশের অন্যতম গ্যাস ক্ষেত্র টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড অদক্ষ কোম্পানি নাইকোকে দিয়ে গ্যাস কূপ খনন করায় পর পর দুইবার অগ্নিকাণ্ডে হাজার হাজার কোটি টাকার গ্যাস বিনষ্ট হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বাঁশতলা-হকনগর এলাকাকে আড়াল করে রেখেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের উপত্যকা হকনগরে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছে। আগামীতে উন্নয়ন চাইলে উন্নয়নের স্বার্থে জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা মার্কাকে অকুণ্ঠ চিত্তে সমর্থন জানাতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। কোনো অপশক্তির কথায় বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। পাউবো'র নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) এস এম শহিদুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার, দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুর রহীম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, লক্ষীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমীরুল হক, ছাতক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু শাহাদাত লাহিন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম মাস্টার, দোহালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী আনোয়ার মিয়ান আনু, ছাতক উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রেজাউল করীম রাজু, দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বরুন দাস প্রমুখ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, পাউবো'র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শমসের আলি, আবু সায়েম শফিউল ইসলাম, খালিদ হাসান প্রমুখ। সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি তাজির উদ্দিনের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থনে দলীয় নেতা-কর্মীরা সমাবেশে উপস্থিত হন।