২০০৯ সিরিজের সঙ্গে মিল দেখছেন রোচ

এক যুগ আগের কথা। বেতন নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় সেবার বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে খেলেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দলের ক্রিকেটাররা। সেটির সঙ্গে এবারের সিরিজের মিল দেখছেন ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ। দেখছেন চ্যালেঞ্জও। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশ সফরে আসেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নিয়মিত ১০ তারকা। ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ান ট্যুরে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওই সিরিজে রোচ ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের এক নবীন বোলার। পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে ক্যারিবীয়রা হেরেছে ওয়ানডে সিরিজ, টেস্টে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। এবারও যে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে বেশ ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছেন রোচ। গতকাল মিরপুরে একাডেমি মাঠে অনুশীলনের পর ৩২ বছর বয়সী পেসার কেমার রোচ বলেন, ‘এবার বাংলাদেশে এসে এক যুগ আগের সেই সিরিজের কথা মনে পড়ছে। তখন আমিও বেশ অনভিজ্ঞ ছিলাম। ছেলেরা তখন বেশ চাপে ছিল ভালো করার জন্য কিন্তু তারা পারেনি। আমাদের বেশিরভাগের জন্যই সেই সিরিজ বড় একটা শিক্ষা ছিল। আমাদের জন্য এবারও একই পরিস্থিতি। গ্রুপ হিসেবে, দল হিসেবে আমাদের কী করতে হবে এর ভালো পারিকল্পনা করেছি আমরা। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ভালো আলাপ হচ্ছে, আজকে (শুক্রবার) এবং গতকালকে তাদের দেখে ভালোই মনে হচ্ছে। আশা করছি ভালো প্রস্তুতি নিয়েই আমরা টেস্ট সিরিজ শুরু করবো।’ টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষেই রেকর্ড সবচেয়ে ভালো রোচের। ৮ টেস্টে ১৯.৭৮ গড়ে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। স্ট্রাইক রেট ৪১.৩। তবে বাংলাদেশের মাটিতে তার নৈপুণ্য অতটা উজ্জ্বল নয়। ৩ টেস্টে শিকার কেবল ৪ উইকেট। গড় ৫৯, স্ট্রাইক রেট ৯৮। ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে তাদের কতটা সংগ্রাম করতে হবে ভালো করেই জানেন রোচ। তবে একই সঙ্গে তার বিশ্বাস, ভালো পরিকল্পনা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়নে পাল্টাতে পারে পরিস্থিতি। রোচ বলেন, ‘সবাই জানি বাংলাদেশ সবসময় পেসারদের জন্য কঠিন। যদি ভালো পরিকল্পনা করতে পারি, ভালো জায়গায় বল করতে পারি তা আমাদের জন্য সহায়ক হবে। এসব ঠিকমতো করতে পারলে আমি মনে করি, আমরা সিরিজে ভালো করতে পারবো।’ ক্যারিবীয় পেসার বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষেই টেস্টে আমার শুরু হয়েছিল, অবশ্য সেটা ঘরের মাঠে ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশে আসা হয়েছে। ওয়ানডে ও টেস্ট খেলেছি এখানে। এটা সবসময় আমাকে বিশ্বাস জোগায় মানসিকভাবে। তারা খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। দল হিসেবে তারা গড়ে উঠেছে।’ টেস্টে পেস বোলিং আক্রমণে রোচের সঙ্গে আছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ। মরা উইকেটেও ব্যাটসম্যানদের ভোগানোর সামর্থ্য আছে তাদের। তবে রোচ মনে করছেন, মূল কাজটা করতে হবে স্পিনারদেরই। তারা যতটা সম্ভব সহায়তা দিয়ে যাবেন। রোচ বলেন, ‘বোলিং ইউনিটের সাফল্যের জন্য দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। আর সেরকমটা হলে আমাদের বোলিং ইউনিট ভালোভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে। আমরা ভালো পরিকল্পনা করছি, বোলিং কোচের সঙ্গে কথা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যেও আলাপ আলোচনা করছি। আমরা জানি, আমাদের কী করতে হবে।’ সিরিজে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলকে নিজেদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন রোচ। ক্যারিবীয় পেসার বলেন, ‘তামিম ইকবাল তাদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের একজন। সাকিব আল হাসান ফিরেছে। মুশফিকুর রহীম আছে, তাদের অধিনায়ক মুমিনুল হকও ভালো ব্যাটসম্যান... বেশ কিছু ভালো খেলোয়াড় আছে তাদের। তবে আমরা আসলে নিজেদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’ বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরতে হলে মাঠে আক্রমণাত্মক থাকতে হবে। পিচে খুব একটা বাউন্স থাকবে না। মাঠে পরিকল্পনাটা ঠিকঠাক করতে হবে এবং সেটার প্রয়োগও। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে গতির সংমিশ্রণ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভালো জায়গায় টানা বল করে যেতে হবে যতটা সম্ভব।’