‘ক্যাচ অনলে’ পুড়ল বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম টেস্টে হারার পর ঢাকা টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ছিল টাইগারদের। কিন্তু মিরপুরের টেস্টে টাইগারদের সেই প্রত্যয়ের ছিটেফোটাও দেখা গেল না। বোলিং তুলনামূলকভাবে ভালো বলা গেলেও ব্যাটিং হয়েছে যাচ্ছেতাই। ‘শফট হ্যান্ডের’ খেলা যেন ভুলেই গেছে বাংলাদেশ। টেস্টের চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিন ‘বটম হ্যান্ডের’ ব্যাটিংয়ে যে ধরনের দক্ষতা দেখাতে হয় রবিবার তার কিছুই হলো না। পরিণামে একে-একে আটজন ‘ক্যাচ-আগুনে’ পুড়ে ১৭ রানে হার ডেকে এনেছেন। মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে রবিবার ২৩১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকেরা ২১৩ রানে অলআউট হয়। শেষ উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ (৩১) আশা জাগিয়েও পারেননি। রাকিম কর্নওয়াল স্লিপে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন। ২০১২-১৩ মৌসুমের পর দুই কিংবা তার বেশি ম্যাচের সিরিজে এই প্রথম হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। মিরাজ নবম উইকেটে নাঈম হাসানকে নিয়ে ২৫ রানের জুটি গড়ার পর আবু জায়েদ রাহিকে নিয়েও সমান রানের জুটি গড়েন। শেষ পর্যন্ত তাকে থামান ওয়ারিকেন। ৬২তম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে হালকা বাউন্স ছিল। অফস্ট্যাম্পের একটু বাইরের এই বলে ব্যাট দিয়ে কানায় লাগান। প্রথম স্লিপে চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করা দীর্ঘদেহী রাকিম কর্নওয়াল দারুণ দক্ষতায় তা তালুবন্দি করে উল্লাসে মাতেন। তাতে একদিন আগেই শেষ হয় বাংলাদেশের লড়াই। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ ২৯৬ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো বল করে স্বাগতিকেরা। এবার সফরকারীরা থামে ১১৭ রানে। অল্প রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার উদ্বোধনীতে ৫৯ রান করে স্বস্তি আনেন। জুটি ভাঙে সৌম্যর বিদায়ে। ১৩তম ওভারে ব্রাথওয়েটের বলে কর্নওয়ালের হাতে ক্যাচ দেন। ৩৪ বলে ১ চারে ১৩ রান করেন তিনি। অর্ধশতকের পর তামিম বিদায় নেন ১৭তম ওভারে। তাকেও ফেরান ব্রাথওয়েট। ৪৬ বলে ৯টি চারে এই রান করেন তিনি। এরপর দ্রুত আরও তিন উইকেট চলে যায়। ২২তম ওভারে কর্নওয়ালকে খেলতে গিয়ে মোয়েসলির হাতে ক্যাচ দেন শান্ত (১১)। অল্পতে বিদায় নেন মুশফিকও। ৩০ বলে ১৪ রান করা এই সিনিয়র ক্রিকেটার ওয়ারিকেনের বলে সিলভার হাতে ক্যাচ দেন। কর্নওয়ালের বাড়তি বাউন্স পাওয়া ডেলিভারিতে বোকা বনে যান মোহাম্মদ মিঠুন। ১২ বলে ১ ছয়ে ১০ রান করে শর্টে মোয়েসলির হাতে ক্যাচ দেন। ৪২তম ওভারে লেগ গালিতে ক্যাচ দেন অধিনায়ক মুমিনুলক হক। ওয়ারিকেনের বলে গ্ল্যান্স করতে গিয়ে তাল মেলাতে পারেননি। ৬৮ বলে ২৬ রান করে ধরা পড়েন কর্নওয়ালের হাতে। দলীয় স্কোর তখন ১৪৬/৬। সিরিজে বারবার হতাশ করা লিটন এদিনও সেট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। কর্নওয়ালের নেহাত সাদামাটা এক ডেলিভারিতে স্কয়ারকাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন। ৩৫ বলে করতে পারেন ২২। টানা সাত ক্যাচ আউটের পর তাইজুলম ইসলাম ‘রীতি’ ভাঙেন। দল ১৬৭ রানে থাকা অবস্থায় কর্নওয়ালের সহজ ডেলিভারিতে ডিফেন্স করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন। রিভিউ নিয়েও রক্ষা না পাওয়া তাইজুল ২৫ বলে ৮ করেন। মিরাজের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়তে থাকা নাঈম (১৪) অদ্ভুতভাবে এলবিডব্লিউ হন। দিনের একদম শেষভাগে ব্রাথওয়েটের নিচু হওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট না দিয়ে পা দিয়ে ঠেকান! কর্নওয়াল একাই নেন ৪ উইকেট। ৩টি করে শিকার ব্রাথওয়েট এবং ওয়ারিকেনের।