বঙ্গবীর ওসমানীর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৪ সালের আজকের দিনে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এমএজি ওসমানী। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠনের পর ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। ওসমানী’র নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়সাধন করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা - প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সঙ্গে পালন করেন ওসমানী। ১২ এপ্রিল থেকে এমএজি ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। বঙ্গবীর ওসমানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেটে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। সিলেট নগরের নাইওরপুল এলাকার ওসমানী জাদুঘরের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতমসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাকে স্মরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৩টায় জাদুঘরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. আব্দুল মালিক। বিশেষ অতিথি থাকবেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জাকারিয়া। জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। সকাল ১০টায় রয়েছে ওসমানীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত। সকাল ১১ টায় থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কোরআন খতম। বিকেল সাড়ে ৫টায় শিরনি বিতরণ শেষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে। এদিকে, জেনারেল ওসমানীর মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ‘বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেট’। সোমবার কর্মসূচির প্রথমদিনে সেলাই মেশিন ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টায় নগরের নাইরপুলে ওসমানী যাদুঘরে শিক্ষিত বেকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী যারা আর্থিক সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি তাদের মধ্যে নগদ টাকা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেটের সভাপতি সৈয়ীদ আহমদ বহলুল’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী দেলোয়ার হোসেন জিলনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, ওসমানী জাদুঘরের সহকারী পরিচালক জিয়ারত হোসেন খান, স্মৃতি সংসদের সহ-সভাপতি আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমনু, প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদস্য আমিন তাহমীদ, কয়েছ আহমদ সাগর। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কারী মো. নুরুল হক, সেলু মিয়া, চুনু মিয়া, হফিজ ফয়ছল আহমদ, ছবদিল আলম, শমসের আলম, শফিকুল হক, শিপন খান প্রমুখ। এদিকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবীর ওসমানীর মাজারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বাদ জোহর বঙ্গবীর ওসমানীর বাড়িতে বঙ্গবীর ওসমানী ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে খতমে কোরআন এবং বাদ আছর হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে মিলাদ শেষে মরহুমের কবর জিয়ারত করা হবে।