ধর্মপাশায় অগ্নিকাণ্ড, ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তরপাশে থাকা একটি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই মার্কেটের ৭টি কক্ষের ভেতরে থাকা কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, কাঠ, ডেকোরেটার্সের মালামাল ও নগদ টাকাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পুড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (১ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন ব্যবসায়ী ও এলাকবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তরপাশে একটি মার্কেট রয়েছে। এই মার্কেটের মালিক আবু তালেব, বকুল মিয়া ও ইসহাক মিয়া। মার্কেটে ৭টি কক্ষ রয়েছে। মার্কেটের মালিকরা স্থানীয় মানুষজনের কাছে ওই ৭টি কক্ষ ভাড়া দিয়েছেন। ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া, কাঠ ও আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসায়ী লিটন মিয়া, হালিম মিয়া, মোবাইল যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী শরীফ মিয়া, কানন মিয়ার পরিচালিত একটি কোচিং সেন্টার ও সেলুন ব্যবসায়ী কক্ষগুলো ভাড়া নিয়েছেন। সেখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনাসহ দু'টি পরিবার সেখানে বসবাস করে আসছে। সোমবার রাত দেড়টার দিকে আগুনের উত্তাপ টের পেয়ে কক্ষগুলোর ভেতরে থাকা লোকজন দ্রুত বের হন। তারা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে আসে। তবে তারা আসার পূর্বেই আগুনে পুড়ে সবকিছু ছাই হয়ে যায়। দোকানঘর থেকে দ্রুত বের হতে গিয়ে দুলাল মিয়া (৫২) নামের এক ব্যবসায়ী আহত হন। তিনি ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাময়িক চিকিৎসা নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী লিটন মিয়া (৪৩) বলেন, 'আগুনে আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার কাঠ ও কাঠের তৈরি মালামাল পুড়ে গেছে। আমার ৩০ বছর ধরে তিলে তিলে জমানো সম্পদ আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।' ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া (৫২) বলেন, 'এই ব্যবসার আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। বেশ কিছু টাকা ঋণ করে ব্যবসাটি দাঁড় করিয়েছিলাম। এখন আমার সব স্বপ্ন তছনছ হয়ে গেছে। খাবো কী আর মানুষের দেনা কীভাবে পরিশোধ করব?' উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান আজ মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, 'আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই মার্কেটটি আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্ষতিগ্রস্তদের নাম-ঠিকানাসহ ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'