ফিলিস্তিনি তরুণ হত্যায় ইসরাইলি পুলিশ দোষী সাব্যস্ত

ফিলিস্তিনের তরুণ ইয়াদ হালাককে গুলি করে হত্যাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ইসরাইলি আদালত। দেশটির প্রসিকিউটররা অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি হত্যা’র অভিযোগ গঠন করেছে। এই ধারায় অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ১২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

হালাকের পরিবার পূর্বে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের তদন্তের সমালোচনা করে দোষীর বিরুদ্ধে শক্ত অভিযোগ গঠনের আহ্বান জানিয়েছিল।

 
 

২০২০ সালের ৩০ মে ইসরায় পুলিশের হাতে অটিস্টিক ওই ফিলিস্তিনি তরুণ ইয়াদ হালাক নিহত হয়।

হত্যার ঘটনাকে ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ট্রাজেডি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

৩২ বছর বয়সী হালাক পূর্ব জেরুজালেমে তার বিশেষ স্কুলে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি পুলিশ তার ওপর গুলি চালায়। হত্যার পর পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, হালাকের কাছে অস্ত্র আছে বলে তারা সন্দেহ করছিলেন। যখন তাকে থামতে বলা হয়েছিল, তখন না থামায় তাকে গুলি করা হয়। কিন্তু পরে দেখা গিয়েছিল ইয়াদ হালাকের কাছে কোন অস্ত্র ছিল না।

এই হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু শোক প্রকাশ করেন। এই ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে বলেও আশা করেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, ইয়াদ হালাকের সঙ্গে যা হয়েছে, তা একটি ট্র্যাজেডি। এই লোকটির অটিজম ছিল। খুব স্পর্শকাতর একটা এলাকায় তাকে ভুলক্রমে সন্ত্রাসবাদী বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল।

কাতারভিত্তিক আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার জেরুজালেমের জেলা আদালতে অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করা হয়। এতে তাকে ‘বিবেচনাহীনভাবে মানুষ’ হত্যায় অভিযুক্ত করা হয়।

পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত বিভাগের প্রসিকিউটররা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সকল পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে, সাক্ষ্য-প্রমাণের গভীর তদন্ত করে তারপর দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। 

প্রসিকিউটররা হালাকের মৃত্যু মারাত্মক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছে। ‘হালাক মৃত্যুর কারণ হতে পারে’ মনে করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ‘অযৌক্তিক ঝুঁকি’ নিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

যেভাবে হত্যা করা হয় ইয়াদ হালাককে
ইয়াদ হালাক জেরুজালেমের ওয়াডি আল জজ থেকে শহরের কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের একটি প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। তাকে হত্যার পর ইসরাইলি পুলিশ দাবি করে, তার হাতে এমন কিছু ছিল, যা পিস্তলের মতো দেখাচ্ছিল।

ইয়াদ হালাকের মৃত্যুতে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়। হাজার হাজার মানুষ তার জানাজায় অংশ নেয়। তার মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে অনেক ফিলিস্তিনি এবং ইসরাইলি। অনেকে তার মৃত্যুকে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে মারা যাওয়া জর্জ ফ্লয়েডের সঙ্গে তুলনা করেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘প্যালেস্টিনিয়ান লাইভস ম্যাটার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছিলেন।