হায়-হোসাইন! হায়! হায়!

বিশ্বনবী (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে কারবালার প্রান্তরে শাহাদতবরণ করেন। মহানবী (সা.) শান্তির যে বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন তা পদদলিত হয়েছে হজরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদতের ঘটনার মাধ্যমে। হজরত ইমাম হোসাইনের সৈন্য বাহিনীর ওপর যখন শত্রু নিয়ন্ত্রণ পায়, তখন তিনি ঘোড়াকে সমুদ্রমুখী করে অগ্রসর হওয়ার জন্য ইচ্ছা করেন। তারপরও তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং তার প্রতি তীর ছুড়ে এবং সেই তীর হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর চিবুকের নিচে লাগে। ইতিহাস বর্ণনাকারী বলেন, আমি শাহাদতের আগে তাকে এ কথাই বলতে শুনেছি, আল্লাহর কসম, আমার পর খোদার এমন কোনো বান্দাকে তোমরা হত্যা করবে না, যার হত্যার কারণে আল্লাহ তোমাদের প্রতি আরও বেশি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করবেন। আমি আশা করি, আল্লাহতায়ালা তোমাদের লাঞ্ছিত করবেন আর আমাকে সম্মানিত করবেন। এরপর আমার হত্যার প্রতিশোধ এমনভাবে নেবেন, যা তোমরা ভাবতেও পার না। খোদার কসম, আমাকে যদি তোমরা হত্যা কর, তাহলে আল্লাহতায়ালা তোমাদের মাঝে যুদ্ধ সৃষ্টি করবেন এবং তোমাদের রক্ত ঝরবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বেদনাদায়ক শাস্তিকে আল্লাহ বহুগুণে বৃদ্ধি না করেন তিনি বিরত হবেন না। ইমাম হোসাইন (রা.)কে শুধু শহিদই করেননি বরং কুফাবাসীরা তার পবিত্র লাশের সঙ্গেও জঘন্য আচরণ করেছে। অমর বিন সাদ আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা দেয়, কে কে হজরত ইমাম হোসাইনের মৃতদেহের ওপর ঘোড়া দৌড়ানোর জন্য প্রস্তুত। এ কথা শুনে ১০ জন ঘোড়সোয়ার বের হয় যারা নিজেদের ঘোড়া নিয়ে তার পবিত্র দেহের ওপর ঘোড়া দৌড়ায় এবং পিষ্ট করে আর তার বক্ষ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়। হজরত ইমাম হোসাইনের (রা.) পবিত্র দেহে ৪৫টি তীর বিদ্ধ হয়। তার মরদেহ পরে কুফার গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়, সে তার শিরোচ্ছেদ করে এজিদের কাছে প্রেরণ করে। (তারিখুত তিবরানি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ: ২৪৩-২৫০)।