সরকারি বই কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মাধ্যমিক শ্রেণীর সরকারি ৮শ’ কেজি বই কেজি দরে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বইগুলো উপজেলার ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বলে জানা গেছে। ফেরিওয়ালা বইগুলো শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ সড়কের চিত্রালী সিনেমা হল সংলগ্ন ইউসুফ আয়রণ মার্ট নামে একটি ভাঙারি দোকানে বেশি দামে বিক্রি করে দেয়। জানা যায়, ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ঝলক চক্রবর্তী ওই স্কুলের মাধ্যমিক স্তরের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর বইগুলো ভাঙারি হিসেবে শ্রীমঙ্গলের একটি ভাসমান ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেন। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই দোকানে গিয়ে শ্রমিকরা বইগুলো ওজন মাপার যন্ত্রে মেপে মেপে গুদামজাত করতে দেখা যায়। বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা,হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, পৌরনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই। বইগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ২০২০ শিক্ষা বর্ষের নতুন বই ও ২০১৯ শিক্ষা বর্ষের পুরাতন উইপোকায় নষ্ট হওয়া কিছু বই। ইউসুফ আয়রণ মার্টের ইউসুফ জানান, তিনি ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ৮শ' কেজি বই ১২ টাকা দরে কিনেছেন। বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রহরী রাম গোপাল দাশ এই বইগুলো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। তবে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই বইগুলো বিক্রি করেছেন। রামগোপাল জানান, প্রধান শিক্ষক পুরাতন বইগুলো বিক্রয় করে কক্ষ পরিষ্কার করার জন্য বলায় তিনি এসব বই বিক্রি করে দেন। ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ঝলক চক্রবর্তী বলেন, 'আমি নিজে স্কুলে ছিলাম না। স্কুলে তো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। সকালে দপ্তরি আমাকে বলে যে স্কুলের কিছু পুরাতন বই উইপোকায় কেটে ফেলেছে। সেসব নষ্ট বই ও কিছু ব্যবহৃত কাগজপত্র বিক্রি করে দেয়ার জন্য বলছিলাম। দপ্তরি সেই বইগুলোর সাথে ভুলক্রমে ২০২০ সালের বই বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দপ্তরি বলেছিল উলুধরার বই। আমি একটু সচেতন হলে এরকম ঘটনা ঘটতো না। বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ লজ্জায় পড়েছি’। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বর্ধন জানান, কোন বিদ্যালয় থেকে সরকারি বই এভাবে কেজি দরে বিক্রি করার নিয়ম নেই। যে বইগুলো অবণ্টনকৃত থাকে সে বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক বই বিতরণ, গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণ কমিটির নিকট জমা দিতে হয়। পরে এগুলো দরপত্র আহ্বান করে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে সরকারি বই কেজি দরে বিক্রি করার নিয়ম নেই। কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এভাবে বই বিক্রি করতে পারেন না। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।