সাকিবের বিশ্বাস পাপনের মাঝে

নিউজিল্যান্ডকে ৫-০তে সিরিজ হারানোর হুঙ্কার দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় সারির কিউইদের বিপক্ষে ৩-২ সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। এই সাফল্যে বড় অর্জন আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে স্বাগতিকদের বড় পরিবর্তন। এই সিরিজে ৪ ধাপ এগিয়ে দশম থেকে ৬ষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ দল। তবে এই অর্জনের পরও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগারদের এগিয়ে রাখতে পাররেছন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে সিরিজ শেষে এমনটাই জানান নিজের বক্তব্যে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন খুব দ্রুতই চার-ছক্কার লড়াইয়ের জন্য দারুণ একটি দল হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।তিনি বলেন, আমরা টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে অনেক পিছিয়ে। টি-টোয়েন্টিতে উন্নতির চেষ্টা করছি। ৬-৭ জন নতুন ছেলেকে নিয়েছি, আলাদা স্কোয়াড করতে চাচ্ছি। এটা একটা রূপান্তর প্রক্রিয়া। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এক বছরে আমাদের টি- টোয়েন্টিতেও শক্তিশালী একটা দল হবে। এ মুহূর্তে দল খুব শক্তিশালী তা না। যেকোনো ফরম্যাটে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল। এগুলো অস্বীকারের পথ নেই। কিন্তু টি- টোয়েন্টি এমন একটা ফরম্যাট এখানে যেকোনো দিন যে কাউকে হারানো সম্ভব। আমরা যে কারও কাছে হেরে যেতে পারি, আবার যেকোনো বড় দল আমাদের কাছে হেরে যেতে পারে। সেদিক থেকে চিন্তা করলে দলের ভালো করার সম্ভাবনা আছে। আপনি-আমি কি মনে করি এটা অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ না। খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে আছে।’ অন্যদিকে এই বছর অক্টোবর- নভেম্বরে দুবাইয়ে বসবে টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। বাংলাদেশ দল তার আগে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি- টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও বিশ্বকাপে কেমন করবে তা নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন! বিশেষ করে শেষ তিনটি সিরিজেই দলের ব্যাটিং ছিল একেবারেই হতাশাজনক। যদিও দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান বিশ্বাস করেন দারুণ কিছু করবে বাংলাদেশ। সাকিবের সেই বিশ্বাস ঝরেছে নাজমুল হাসান পাপনের কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে কথা হয়েছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের যে পরিকল্পনা তা ঠিক করতে পারিনি। দেড়টা বছর আসলে আমাদের যা যা প্ল্যান মাথায় ছিল অরিজিনালি সেটা আমরা করতে পারিনি। কিন্তু অনেক দেশ করতে পেরেছে। সুতরাং এটা একটা সমস্যা ছিল আমাদের দেশে কাউকে আনা কিংবা অন্য দেশে গিয়ে আমাদের খেলা। এগুলো নিয়ে একটু সমস্যা ছিল। প্রথম এক বছর তো গেছে প্যানিকড, খেলাধুলা নিয়ে কিছুই ছিল না। একটা লম্বা সময় বিরতি ছিল। আমি বলবো না যে, প্রস্তুতি খুব একটা ভালো হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। তারপরও যতটুকু করতে পেরেছি আমি মনে করি কিছুটা করতে পেরেছি এবং সেটা ভালোভাবে করেছি। সাকিব আমাকে বলছে- আমাদের ভালো সুযোগ আছে এবার। সাকিবের মতো খেলোয়াড় যখন বলে এবার ভালো সুযোগ আছে তার মানে দলের উপরও তার আত্মবিশ্বাস আছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তামিম-মাহমুদুল্লাহ কোনো সমস্যা নেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার আগেই তামিম ইকবাল নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দেশসেরা অধিনায়ক জানিয়েছেন, ইনজুরির কারণে দীর্ঘদিন তিনি টি-টোয়েন্টি খেলছেন না। ১৮ মাস এই ফরম্যাটে জাতীয় দলের বাইরে। তাই দলের বোঝা না হয়ে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে হঠাৎ কেন সরে দাঁড়ালেন তিনি। কেউ বলছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে বনিবনা না হওয়াতেই এমন সিদ্ধান্ত। তবে সবকিছু ছাপিয়ে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দিকেও যাচ্ছে আঙ্গুল। বলা হচ্ছে- তার সঙ্গে দূরত্বের কারণেই তামিম সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান তা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওয়ানডে অধিনায়কের সঙ্গে মানে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে তামিমের কোনো সমস্যা আছে কি না? প্রথম কথা হচ্ছে- বায়ো-বাবল, এর জন্য এখন টিমের কাছাকাছি যাওয়া যায় না। তবুও আমি যতটুকু জেনেছি কোনো সমস্যা নেই। আমি যতটুকু দেখেছি কোনো সমস্যা দেখিনি। জালাল ভাই আগের সফরে দলের সঙ্গে গিয়েছিল, আমি তাঁকে জিজ্ঞাস করেছি, ববি ভাই গিয়েছেন তাকে জিজ্ঞাস করেছি। তারা কেউ কোনো সমস্যা খুঁজে পায়নি। তাই আমি বলবো, এই জিনিসটা মন্তব্য করার কোনো কারণই আমি দেখছি না। তামিমকে তার নিজের সিদ্ধান্ত ভেবে দেখতে কিংবা রিভিউ করতে এমন কিছুই হয়নি। এমন কোনো ঘটনাই হয়নি। এটা ভুল তথ্য। এমনটা হওয়ার কথাও নয়। কারণ তামিম এই সিদ্ধান্ত আমার সঙ্গে কথা বলে, আলোচনা করে নিয়েছে। যেখানে এই সিদ্ধান্ত আমার সঙ্গে আলাপ করেই নিয়েছে সেক্ষেত্রে তাকে দ্বিতীয়বার প্রস্তাব দেয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’