প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজ মেয়েকে লুকিয়ে অপহরণ মামলা, ১২ বছর পর ঢাকা থেকে উদ্ধার

প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গিয়ে নিজের মেয়েকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা দেয়ার ১২ বছর পর ভিকটিম জফুরা খাতুনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভিকটিম নাম পরিবর্তন করে ঢাকার একটি গার্মেন্টেসএ চাকুরী করত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার কদমতলী থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে।

জানা যায়, ১২ বছর পূর্বে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে ফুল মিয়ার সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে হারুন মিয়ার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের প্ররোচণায় হারুন মিয়ার লোকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে ফুল মিয়ার স্ত্রী আমিনা খাতুন। মামলাটির দুটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হলে হারুন মিয়াকে ঘায়েল করতে ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর আমিনা খাতুন তার নাবালিকা মেয়ে জফুরা খাতুনকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে হবিগঞ্জ সদর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আসামি করা হয় আব্দুর রশিদ, ছুরুক মিয়া, আব্বাছ মিয়া ও হারুন মিয়াকে। এই মামলাটিও দুইবার তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে জুডিসিয়াল ইনকোয়ারীতে অভিযোগটি আমলে নেন বিজ্ঞ বিচারক। পরে এই মামলায় আব্দুর রশিদ ও ছুরুক মিয়া দীর্ঘ কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে এবং আব্বাস মিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন লাভ করে। হারুন মিয়া আত্মসমর্পণ করেনি।

এই ঘটনার দীর্ঘদিন পর জানা যায়, ভিকটিম জফুরা খাতুন ফাতেমা নাম ধারন করে ঢাকার কদমতলীর এএসটি এ্যাপারেল নামক গার্মেন্টস-এ চাকরি করছেন। পরে হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই সনত চন্দ্র দাস ঢাকার পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। হারুন মিয়া বলেন, কুচক্রি মহলের প্ররোচণায় ফুল মিয়ার স্ত্রী প্রথমে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা ও পরে অপহরণ মামলা দায়ের করে। এই মামলায় আমাদের লোকজনকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু সত্য উদঘাটন হওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমরা এই মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে আমাকে যে হয়রানি করা হয়েছে তার বিচার চাই।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) মাসুক আলী জানান, ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।