চট্টগ্রামে ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শককে পরিবহন শ্রমিকদের ধাওয়া, নেপথ্যে-

চট্টগ্রাম নগরে চাঁদাবাজির অভিযোগে মোস্তফা আল মামুন নামে ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শক (টিআই)কে ধাওয়া করেছে স্থানীয় গণপরিবহন শ্রমিকরা। তবে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি অবৈধ গাড়ির লাইন বন্ধ করে দেয়ায় এক শ্রমিক নেতার ইন্ধনে তার ওপর হামলা করা হয়েছে। সোমবার নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার সিটি গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিটি গেটের কৈবল্যধাম এলাকায় নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট ফাহিম মৃধা। টিআই মোস্তফা আল মামুনও সেখানে ছিলেন। এসময় মাস্ক না পরে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আনোয়ার হোসেন নামে স্থানীয় এক শ্রমিক নেতাকে টিআই মামুন সরে যেতে বলেন। সে সময় ওই ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে বুঝে ওঠার আগে কয়েকজনের সহযোগিতায় টিআই মামুনকে ধাওয়া দেন। স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। একপর্যায়ে তারা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। পরে আকবর শাহথানার পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এ বিষয়ে টিআই মামুন  বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমি এই এলাকায় দায়িত্বে আসি। এরপর এখানকার কয়েকটি অবৈধ লাইন বন্ধ করে দেই। বিশেষ করে সিটি গেইট এলাকায় একটি অবৈধ কার এবং একটি অবৈধ অটোরিকশা লেন বন্ধ করে দেয়ায় আনোয়ার হোসেন নামে স্থানীয় এক পরিবহন শ্রমিক নেতা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। মূলত তার ইন্ধনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই আনোয়ার হোসেন তার স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় কৌশলে সাধারণ শ্রমিকদের দিয়ে সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা বলে বেড়াচ্ছে আমি চাঁদাবাজি করছি। আমি যেকোনো ধরনের অনিয়ম করি না সেটা স্থানীয় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আমাদের হেডকোয়ার্টার পর্যন্ত জানে। আর কেউ আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেবো। আমি তাদের সঙ্গে চাঁদাবাজি না করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিই বলেই আনোয়ারসহ তার লোকজন আমার ওপর ক্ষুব্ধ।’ তবে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাস হেলপারকে মামলা দিবে না হয় গাড়ি জব্দ করবে কিন্তু গায়ে হাত তুলবে কেন? উনি নিজেই হেলপারের গায়ে হাত তুলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে। আবার আমার ওপরও তিনি চড়াও হওয়াতে শ্রমিকরা উনাকে ধাওয়া করেছেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। টিআই মামুনের একগুঁয়েমি কর্মকাণ্ডের কারণে আগে থেকেই চালক-হেলপাররা ক্ষিপ্ত ছিল।’ নিজেকে বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকা যান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি পরিচয় দেয়া এই ব্যক্তি বলেন, ‘টিআই মামুন সবসময় নিজেকে সৎ বলে দাবি করেন। আমরা তার বিরুদ্ধে নিজেদের লোকজন দিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। তিনি কোন জায়গা থেকে টাকা নেন সেটির খোঁজ নিচ্ছি। শিগগিরই আপনাদের কাছে এগুলোর প্রমাণ পাঠাবো।’ এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। ভিডিওটাও দেখেছি। আমরা আমাদের মতো করে তদন্ত করছি। তবে বলে রাখি অবৈধ যানবাহনের বিষয়ে আমরা কাউকে কোনো ছাড় দেবো না।’