‘ফ্রাস্টেটেড’ মাহমুদুল্লাহ চটেছেন ব্যাটারদের ওপর

মাত্র ১৪১ রানের লক্ষ্য! প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমদের লিটন দাস, সৌম্য সরকারদের মতো তারকা খচিত দলের কাছে এই লক্ষ্য মামুলিই বলা চলে। কিন্তু আরও একবার প্রমাণিত হলো সেই বাণী- ‘ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা।’ আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছোট বড় দল বলে কিছু নেই। কারণ, শেষ পর্যন্ত স্কটিশরাই ৬ রানে হারিয়ে দিলো টাইগারদের। বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব পার হওয়ার সিঁড়ির প্রথম ধাপেই চোট খায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসরের সুপার-টুয়েলভ পর্বে যাওয়া হবে কি-না তা নিয়েও জেগেছে শঙ্কা। অবশ্য অধিনায়ক মনে করেন শেষটা ভালোই হবে। শেষ ম্যাচে এমন অপ্রত্যাশিত হারের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। রিয়াদ বলেন, ‘আমার মনে হয় বোলাররা ঠিক পথেই ছিল। তারা ৬০ রানের ভেতরই ৬ উইকেট ফেলে দিতে পেরেছে। কিন্তু এরপর বড় পার্টনারশিপ দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আমি মনে করি স্কটল্যান্ডের ওই দুই ব্যাটার আমাদের চেয়ে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে। খুবই হতাশাজনক। আমি মনে করি ফ্ল্যাট উইকেটে ১৪০ চেজেবল স্কোর। আমাদের ব্যাটিং ইউনিটে বেশ কিছু সমস্যা ছিল, যেটি আমি আগেই বলেছি। আমরা সেই ভুলগুলো শুধরে সামনের ম্যাচে কাজে লাগাবো।’ বরাবরের মতোই পাওয়ার প্লেতে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল। ব্যাট হাতে গতকাল ৩০ রানও তুলতে পারেনি শুরুর ৬ ওভারে। শুধু তাই নয়, পাওয়ার হিটিং গ্রাফে উন্নতির লক্ষণ নেই। মাহমুদুুল্লাহ অবশ্য এই সত্যিটা অকপটে মেনেও নিলেন। তিনি বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে প্রথম ছয় ওভার আমরা রান করতে পারিনি। আমরা চাচ্ছিলাম প্রথম পাওয়ার প্লে যেন ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি। ১৪০ তাড়া করতে কিন্তু আপনার ভালো একটা শুরুর প্রয়োজন। ওখান থেকে মুশফিক সাকিব কিছুটা রিকভারিও করেছিল। কিন্তু মিডলে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। যেটা আমি বললাম যে উইকেট ভালো ছিল কিন্তু আমরা সেটি কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের ভুল বেশি ছিল।’ রান তাড়া করতে গিয়ে টাইগার ব্যাটারদের মনে হয়েছে বেশ এলোমেলো। পরিকল্পনার ছাপ ছিল না তাদের ব্যাটিংয়ে। অধিনায়ক অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন তাদের পরিকল্পনা প্রয়োগের ব্যর্থতার কথা। তিনি বলেন, ‘আমাদের হয়তো একটা প্ল্যান ছিল যে আমরা যদি স্পিনারদের বেশি আক্রমণ করতে পারি, তাদের ওভারে যদি রান হতো তাহলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারতাম। মাঝখানে আমরা কয়েকটি উইকেট হারিয়েছি। বড় ওভারগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। যার কারণে রান রেটটা বেড়ে গেছে। আগামী ম্যাচে আমাদের সেগুলো মাথায় রাখতে হবে।’ টাইগার আধিনায়ক বার বারই আঙুল তুলেছেন ব্যাটারদের দিকে। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে যেভাবে ব্যাটিং করতে চাচ্ছিলাম, সিচুয়েশন যেমন ডিমান্ড করছিল সেরকম আমি দিতে পারিনি। কিন্তু আমার মনে হয় না প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলায় আমার ব্যাটিংয়ে সমস্যা হয়েছে। আমার কাছে যেই জিনিসটা মনে হয় ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে আমাদের আরও ভালো করে চিন্তা করতে হবে। মাঝে একটা পার্টনারশিপ দরকার ছিল, সাকিব-মুশির যেই পার্টনারশিপটা ছিল, সেটি বাদেও মাঝে আরও একটি পার্টনারশিপ দরকার ছিল। সেটি হতে পারতো আমি সোহান, আমি আফিফ। কিন্তু আমরা সেটি করতে পারিনি। আমরা যদি ১৫-১৬ রান বেশি নিতে পারতাম তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো। এক্ষেত্রে ক্রেডিট দিতে হবে তাদের বোলারদের। ওরা দুর্দান্ত প্রয়োগ দেখিয়েছেন, আমরাও কিছু ভুল করেছি যেটার মাশুল আমাদের দিতে হয়েছে। আসলে এখানে বোলারদের দোষ দেয়াটা ঠিক হবে না। পেইসাররা প্রথম পাওয়ার প্লেতে বেশ ভালো স্পেল করেছিল। স্পিনাররা মাঝে দিয়ে বেশ ভালো করেছিল। মেহেদী ভালো বোলিং করেছে, উইকেট বের করে দিয়েছে। সাকিব ভালো বোলিং করেছে। ডেথ ওভারে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। কিন্তু ব্যাটিংটা আমাদের খুবই বাজে ছিল।’ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর মহাবিপদে বাংলাদেশ। শেষ দুই ম্যাচ জিততেই হবে নয়তো মিলবেনা আরব আমিরাতের টিকিট। তাই টাইগার অধিনায়ক বার বার দলকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন যদি এই জিনিসগুলো খেয়াল না করি, আগামী ম্যাচগুলোতে একই ভুলগুলো করি, তাহলে সামনের ম্যাচগুলোতেও ভালো কিছু হবে না সম্ভবত। অবশ্যই আমি ফ্রাস্টেটেড। এই মুহূর্তে আমার ফ্রাস্টেটেড না হয়ে কোনো উপায়ও নেই। যেটা বারবারই বলা লাগছে ব্যাটিংটাই আমাদের মূল চিন্তার বিষয়। আমাদের ভালো ব্যাটিং করতে হবে।’