মণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবাল গ্রেপ্তার

ইকবাল হোসেন নামে কক্সবাজার থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তিনি কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ইকবাল হোসেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ রাত ১০টার দিকে ‘সুগন্ধা’ সৈকত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। এখন কুমিল্লা জেলা পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত করবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, এই ব্যক্তিই কুমিল্লার ইকবাল হোসেন। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ যাচাই-বাছাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

’ শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে একটি অস্থায়ী পুজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ দেখা যায়। এরপর কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন চারজন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুজন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের আরও অনেক এলাকায় হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করা হয়।

গতকাল বুধবার কুমিল্লা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে স্থানীয় এক যুবক গভীর রাতে মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে ওই পুজামণ্ডপে রেখেছিলেন। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইকবালের বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, ইকবালের বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। তাদের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়। ইকবাল হোসেনকে ভবঘুরে হিসেবে বর্ণনা করে পুলিশ বলেছে, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে আজ বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নির্দেশনা পেয়ে কিংবা কারও প্ররোচনা ছাড়া ইকবাল হোসেন এটি করেছেন বলে তারা মনে করেন না। তাকে ধরতে পারলে বাকি সব উদ্ধার হবে বলে তিনি মনে করছেন।