খালেদা জিয়া এখনো অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অবস্থা 'এখনো গুরুতর' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, 'ম্যাডাম অত্যন্ত গুরুতরভাবে অসুস্থ। অর্থাৎ যেকথা আমি বলেছিলাম প্রথম দিনে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এই কথাটাই অ্যাপ্রুপ্রিয়েট। উনার অবস্থা স্টিল ক্রিটিক্যাল। এটা বলা যাবে না যে, উনি বিপদের বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। স্টিল ইটস ভেরি ডিফিকাল্ট।' 'মোদ্দা কথা হচ্ছে, তাকে অতি দ্রুত, সময় নষ্ট না করে বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে পাঠানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এটা চিকিৎসকদের কথা। সরকারের কাছে আমি আবেদন জানিয়েছিলাম যে, রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাকে প্রাধান্য না দিয়ে জীবনকে বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য, একটা স্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করবার জন্য উনাকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ করে নিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি।'

তিনি বলেন, 'এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক প্রতিদিন বোর্ড মিটিং করেন। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এবং তারা এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন। একসময়ে তারা ম্যাডামকে দেখতে আসেন। প্রতিদিন যে রিপোর্টগুলো সেগুলো প্রতিদিনই এনালাইসিস করেন এবং সেভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন।' 'মেডিকেল বোর্ডের আজকের বিকালের খবরটা আমি জানি না। আপনাদের এই অনুষ্ঠান শেষ করে আমি যাব। তবে আমি যতদূর জেনেছি যে কোনো ফার্দার ইম্প্রুভমেন্ট হয়নি। গতকাল যা ছিল তার চেয়ে ভালো কিছু সেটা না। বলা যায় যে, একটা স্ট্যাটিক অবস্থা থাকে কখনো একটু ভালো হয়, কখনো একটু খারাপ হয়-এই অবস্থার মধ্যে চলছে।'

তিনি বলেন, 'আমার সঙ্গে তার দুই একবার দেখা হয়েছে। তার মনোবল যথেষ্ট শক্ত আছে। মনোবলটা কিন্তু বড় জিনিস যেকোনো অসুখ থেকে রোগী সুস্থ হওয়ার জন্য। এটা অত্যন্ত জরুরি। সেই মনোবলটা তার আছে।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলছেন যে, এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। এখন যে জটিল অবস্থা আছে সেই জটিল অবস্থা চিকিৎসা করতে হলে তাকে অবশ্যই একটা অ্যাডভান্স সেন্টারে পাঠাতে হবে।' 'সুনির্দিষ্টভাবে তারা দেশের নামও বলেছেন। হয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অথবা জার্মানি। এই তিনটা দেশের যেকোনা জায়গা হতে হবে। আমাদের তরফ থেকে, পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে সকলের সঙ্গে। বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সেদিক থেকে কোনো ত্রুটি নেই কোথাও।'

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো চিন্তাভাবনা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'যখন আমাদের নেত্রী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তখন পরপর দুইবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম এবং তাকে হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেছিলাম। আমরা প্রতি মুহূর্তে মনিটরিং করছি। আমরা রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেইনি।'