ঝগড়ার পর স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

বান্দরবানে পারিবারিক কলহের পর স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে হত্যার দায়ে মো. আবুল কালাম (৪৫) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। সোমবার বেলা ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ মো. এহ্সানুল হক আদালত এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আবুল কালাম (৪৫) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩নং ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি ঠাণ্ডা ঝিরি ৩নং ওয়ার্ডের মৃত মকবুল আলীর ছেলে। তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম একই এলাকার মো. সৈয়দ আলমের মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বেদারুল আলম জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি মো. আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, আসামি মো. আবুল কালাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা করে। এ মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আদালতের বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, ২০১৩ সালে ১৭ মার্চ সকালে মো. আবুল কালাম তারবসত বাড়িতে পারিবারিক কলহ হয়। এর জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে গাছের মোটা লাঠি দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্যা করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ নিহত মনোয়ারা বেগমের বাবা মো. সৈয়দ আলম বাদী হয়ে জামাতা মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় এজাহার দায়ের করে। পুলিশ ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর এ ঘটনায় মো. আবুল কালামকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। আসামি মামলার শুরু থেকে পলাতক ছিল। পরে আদালত ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। পরে ৩ নভেম্বর আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করে। এ সময় আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠায়। আসামিপক্ষ থেকে এ মামলায় চার সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত এ রায় দেন। মামলার বাদী ও মনোয়ারা বেগমের বাবা মো. সৈয়দ আলম রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।