অনশনকারীদের একজনের বাবার হার্টঅ্যাটাক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বিকাল ৩টা থেকে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। তাদের ৫ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের মধ্যে ১১ জনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একজনের বাবা হার্টঅ্যাটাক করায় তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে এক শিক্ষার্থীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং অন্য একজন বমি করেন। পরবর্তীতে ডাক্তার চেক করে স্যালাইন পুশের পরামর্শ দেন। এরপর দুপুরে কাজল দাশ নামে এক অনশনকারীকে রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে বিকাল ৫টার পর আরও ৪ শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ধাপে ধাপে তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ নিয়ে মোট ৫ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনস্থল থেকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এছাড়া একজন অনশনকারীর বাবা হার্টঅ্যাটাক করায় তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে। এখন ২৩ জন শিক্ষার্থী অনশন করছেন। এদের মধ্যে ১৮ জন ভিসির বাস ভবনের সামনে এবং ৫ জন হাসপাতালে অনশন করছেন। অনশনরতদের মধ্যে ১১ জনকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের পরামর্শে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগের একটি মেডিকেল টিম অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল জানান, সময় যত যাচ্ছে অনশনরত প্রায় সবার স্বাস্থ্য অবনতির দিকে। আমরা এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতালে রেফার্ড করছি।

অনশনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন জানান, তারা পানিসহ কোনো ধরনের তরল খাদ্য গ্রহণ করছেন না। যার ফলে অনেকেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। তবে ভিসির পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কেউ অনশন ভাঙবেন না। বুধবার বিকেল ৩টা থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। ভিসির পদত্যাগ পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

এদিকে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার জানান, এ আন্দোলন এবং অনশন শুধুমাত্র ভিসির পদত্যাগের জন্য। রাজনৈতিকভাবে এটাকে ব্যবহার না করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। অন্যদিকে তিন দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসি কুমার দাশের নেতৃত্বে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ভিসির পদত্যাগের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করার প্রস্তাব দেন, আর শিক্ষকরা সেই প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে আলোচনার কথা নাকচ করে দেন।