‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন ও মহাসচিক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমনটা বলা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত কয়েকদিন ধরে শাবি শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ন্যায্য দাবি-দাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘটিত আন্দোলনকে ভিন্নখানে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত খবরে জানা যায়, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, ছাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করাসহ নানা অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার রাতে শাবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীরা ক্যাম্পাসের গোলচত্বর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। গভীর রাতে উপাচার্যের আশ্বাসে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান। পরেরদিন শুক্রবার কয়েকজন ছাত্রী উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিতভাবে প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ, নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ এবং হলের অব্যবস্থাপনার দ্রুত কার্যকর সমাধানের দাবি জানান। উপাচার্য হলের সব সমস্যা সমাধানে ছাত্রীদের কাছে এক মাস সময় চান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে সময় না দিয়ে দাবি মেনে নিতে আল্টিমেটাম দিয়ে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন।

১৬ জানুয়ারি রবিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। উপাচার্য মহোদয় ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় হঠাৎ একদল উশৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে আইসিটি ভবনে নিয়ে যান। সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ রয়েছে সরকারবিরোধী সুযোগ সন্ধানী মহল ইতোমধ্যে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 এদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও একটি মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। আমরা মনে করি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় নয়। বরং তা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে। বর্তমান উপাচার্য বিম্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তারপরেও সমাধানযোগ্য একটি বিষয়কে উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপান্তর করার উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি।