নানা মারা গেলেও অনশন ভাঙেননি শাবিপ্রবির রুবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাবা গতকাল হার্ট অ্যাটাক করেছেন। হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১১ জন। তারা হাসপাতালেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে শাবিপ্রবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপে জানা যায়, এক অনশনকারী হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। তাকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে রুবি নামে আরেক অনশনকারীর নান মারা গেলেও তিনি অনশন ভেঙে নানাকে শেষবারের মতো দেখতে যাননি। রুবির বন্ধুরা দেশ রূপান্তরকে জানান, রুবি এখন হাসপাতালে আছে। সেখানেই সে অনশন চালিয়ে যাচ্ছে। তার দৃঢ়চেতা মনোভাব আমাদের শক্তি জোগাচ্ছে। আন্দোলনের শক্তি পাচ্ছি আমরা। এই সব সেক্রিফাইস শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস, প্রশাসনের জন্য। যে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ মনে করবে নিজেকে।

তারা আরও জানান, যে ভিসি পুলিশ ডেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করাতে পারে, তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নিজের কিছু করার নেই জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল আজ একটি কলাম লিখেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, মনে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না। …সরকারের নিয়োগ দেওয়া ভাইস চ্যান্সেলরকে প্রত্যাহার করা সরকারের জন্য খুবই অপমানজনক একটা ব্যাপার তাই সরকার কখনই সেটা করবে না। ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের সঙ্গে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক আছেন, শুধু তাই নয় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভাইস চ্যান্সেলররাও আছেন, কাজেই তার নিজ থেকে পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না।

এর আগে সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল ২৫ নাগরিক তাদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা সংহতি জানিয়ে বিবৃতিতে বলেন, অনশনরত সন্তানদের খোলা আকাশের নিচে রেখে। অনাহারে থাকা ছেলেমেয়েদের বাইরে রেখে এখন শীতনিদ্রার সময় নয়।

শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনড়। এর আগে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলে তারা জানিয়ে দেন, উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া কোনো আলোচনায় তারা বসবেন না। শিক্ষকদের প্রতিনিধিদেরও তারা একই কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আলোচনার আহ্বান জানান তাদের। তবে, অসুস্থতার কারণে তারা ঢাকায় এসে আলোচনা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা বিনীতভাবে মন্ত্রীরে ক্যাম্পাসে আলোচনার অনুরোধ করেন।

শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এখন আমরণ অনশন পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।