বিদিশার মৃত্যুর পর বান্ধবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রহস্যজনক মৃত্যুর সারি দীর্ঘ হচ্ছে। দু'দিন আগেই নাগেরবাজারের রামগড় কলোনির বাড়ি থেকে বিদিশা দে মজুমদার নামে এক মডেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এবার তার বান্ধবী মঞ্জুষা নিয়োগীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ মে) সকালে পাটুলির বাড়ি থেকে মঞ্জুষার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে খবর, বিদিশার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মঞ্জুষা। বিদিশার মৃত্যুর পরই হতাশায় ভুগতে শুরু করেছিলেন মঞ্জুষা। তার জেরেই আত্মহত্যা। ইতোমধ্যে মঞ্জুষার অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, বহুদিন ধরেই টালিউডে কাজ করছেন মঞ্জুষা। থিয়েটারের পাশাপাশি একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করতেন তিনি। দিন চারেক আগেই পাটুলিতে বাবার বাড়িতে এসেছিলেন এই অভিনেত্রী।

গত বুধবার (২৫ মে) বিদিশার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন। বিদিশার মৃ্ত্যুর নেপথ্য়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কের তত্ত্ব প্রকাশ্য়ে এসেছে। মঞ্জুষার মৃত্যুর নেপথ্যেও তেমন কোনও ঘটনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

অন্যদিকে এর আগেও দু'বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বিদিশা। তবে বান্ধবী ও সহকর্মীদের বাধার মুখে তিনি কিছু করতে পারেননি। সবশেষ বুধবার (২৫ মে) ভোর রাত পর্যন্ত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন এক বান্ধবী। তবে শেষরক্ষা হলো না। ইতোমধ্যে বিদিশার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিদিশার এক বান্ধবী থানায় ফোন করে খবর দেন। এরপর ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে বিদিশার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার দেহের পাশে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। সেখানে তিনি নিজের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিদিশার সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্যারিয়ার নিয়ে সমস্যায় ছিলেন তিনি। আর তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তবে বিদিশার বান্ধবীরা অনুভব বেরা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরেই ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন বিদিশা।

তবে একই সঙ্গে একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমিকের সম্পর্ক থাকায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। আর সে কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

এদিকে বিদিশার সিডিআর খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চেক করা হচ্ছে তার কল ও চ্যাট লিস্ট। তিন বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। কাজ না পাওয়ার হতাশার সঙ্গে প্রেমিকের বিশ্বাসভঙ্গের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনি কী কী কাজ করেছেন, কাজের ব্যাপারে কাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে সবকিছু আমলে নিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর নিশ্চিত হতে চাইছেন তারা।