জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় কেউ মারা যায়নি: সুনামগঞ্জে পরিকল্পনামন্ত্রী মন্ত্রী

জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় কেউ মারা যায়নি: মন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, একটি কুচক্রী মহল তিন মাস আগে থেকে বলছে- দেশ শ্রীলংকা হয়ে যাবে। এসব কথা আমলে নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না, দেশ শ্রীলংকা হবে না। শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা সব কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগোচ্ছি। আর মাত্র এক মাস, আমরা আগের অবস্থানেই ফিরে যাব।

মন্ত্রী বলেন, যারা বলে ‘আওয়ামী লীগের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে’, জনগণ তাদের ঘণ্টাই বাজিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের বিদায় ঘণ্টা কখনোই বাজবে না। আওয়ামী লীগের ভিত অনেক মজবুত। বিএনপি আসবে, যাবে। তারা কীভাবে ক্ষমতায় এসেছিল দেশের মানুষ জানে। প্রবাদ আছে, ‘শকুনের দোয়ায় গরু মরে না’। সুতরাং কোনো ভয় নেই, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সঙ্গে ছিল, আছে, সবসময়ই থাকবে।

বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধুর গণমুখী সমবায় ভাবনার আলোকে বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদেরকে আবর্তক তহবিল থেকে ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জনবান্ধব এই সরকারের শাসনামলে মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হয়েছে। সরকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি নামে একটি দল আছে যারা কোনো কাজ করে না। বিএনপির কাজই সরকারের সমালোচনা করা। জনগণের পাশে থাকে না। এতবড় বন্যা গেল কোথাও তো তাদের দেখা গেল না। মাঝেমধ্যে রাস্তাঘাটে কিছু ছিটিয়ে দিয়ে গেছে, সেগুলো লোক দেখানো। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার বন্যা পরিস্থিতিতে সার্বক্ষণিক মানুষের পাশে ছিল। ঘরে ঘরে সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছে, সহায়তা এখনো চলমান আছে, আরও দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আছে, আমাদের পছন্দ করে না। দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে। তারা বলছে- জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, মানুষ মরে যাবে। এসব কথায় কান না দেওয়ার অনুরোধ করে মন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার বিষয়টি অস্বীকার করব না। কিন্তু এখনো কেউ জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মারা যায়নি, আশা করি মরবে না।

‘বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এই সংকট আমেরিকা-রাশিয়ার তৈরি। অথচ একটি মহল আমাদের দোষারোপ করে ফায়দা নেওয়ার অপচেষ্টায় আছে। সামনে নির্বাচন আসছে, বন্ধু-শত্রু আপনারাই বাছাই করবেন। বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, সার, বীজ বিনামূল্যে আওয়ামী লীগ সরকারই গ্রামের মানুষকে দিচ্ছে। এগুলো বিবেচনা করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রামাঞ্চলে মানুষদের ভালোবাসেন। হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রতি উনার মায়া বেশি। আর এজন্যই হাওরাঞ্চলে আমরা বড়বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। গ্রামাঞ্চলে টিউবওয়েল, স্যানিটারি ল্যাট্রিন দেওয়া হয়েছে। যেখানে যা প্রয়োজন সব করা হচ্ছে। কাজেই শেখ হাসিনাকে মনে রাখতে হবে। ইনশাআল্লাহ, খুব শিগগিরই সব সমস্যা সমাধান করতে পারব আমরা। আমাদের বিদ্যুতের সমস্যাও দূর হয়ে যাবে। এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

মন্ত্রী উপস্থিত সবাইকে নিজেদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম ডুংরিয়া সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সমবায় কর্মকর্তা মাসুদ আহমদের সঞ্চালনায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি বিশ্বাস ও জেলা সমবায় কর্মকর্তা বশির আহমদ।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এলজিইডির জেলা প্রকৌশলী মাহবুব আলম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, এসিল্যান্ড সকিনা আক্তার, শান্তিগঞ্জ থানার ওসি খালেদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজী তহুর আলী, ডুংরিয়া হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মদনমোহন রায়সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।