নান্দনিক রুপে সাজানো সিলেট বৃক্ষমেলা নতুন করে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন নার্সারী ব্যবসায়ীদের

সিলেটে পক্ষকাল ব্যপী বৃক্ষমেলায় ফুলে-ফলের লাল-সবুজের বৃক্ষে সেজেছে সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠে। লাল-সবুজের নান্দনিক পরিবেশে উকি দেয়া নানার ধরণের বৃক্ষ নজর কেড়েছে দর্শনাথীদের। ফলজ, বনজ এবং ঔষুধিসহ বিভিন্ন জাতের গাছের দেখা মেলেছে এবারের মেলায়। বাহাড়ি পাতায় সাজানো এবং বৃষ্টি ভেজা ফুলের গাছে ফুটিয়ে তুলেছে মেলা অঙ্গন।

সিলেট বন বিভাগের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গত ৩০ জুলাই শুরু হওয়া পক্ষকাল ব্যাপী ‘বৃক্ষরোপন অভিযান ও বিভাগীয় বৃক্ষমেলা-২০২২’ চলবে আগামী ১৩ আগষ্ট শনিবার পর্যন্ত। পক্ষকাল ব্যাপী মেলায় ফলজ, বনজ, ঔষুধি ও শোভা বর্ধনকারী গাছের ২০টি নার্সারির স্টল বসানোর অনুমোদন দিয়েছে সিলেট বন বিভাগ।

৩০ জুলাই ‘বৃক্ষপ্রাণে প্রকৃতি-প্রতিবেশ আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’ স্লোগানে বৃক্ষমেলা শুরু হওয়ার পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজারের অধিক গাছসহ নানা চারা বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে অংশগ্রহনকারী স্টল মালিকরা। নার্সারি মালিকরা জানান, করোনার কারণে গত দুই বছর ধরে সিলেটে বৃক্ষ মেলা হয়নি। এছাড়া সিলেটে দুই দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নার্সারির বৃক্ষসহ বিভিন্ন উপকরণ। সবকিছুর পরেও এবারের মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় নার্সারি মালিকরা একটু স্বস্তি ফিওে পাচ্ছেন। কিছুটা হলেও প্রচার-প্রচারনা ও বেচা-কেনা করা সুযোগ হয়েছে।

স্টল মালিকরা বলেন, বনজ গাছ বিক্রি হলেও শোভা বর্ধনকারী বিভিন্ন ফুল ও গাছ বিক্রি হচ্ছে ভালো বিক্রি হচ্ছে। মেলার দেখা গেছে, আম, জাম, বেল, করমচা, শরিফা, সাতকরা, আমড়া, লেবু সহ নানান জাতের ফলজ ও বনজ গাছ বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তাছাড়া ঘর সাজানোর জন্য এন্থোরিয়াম, অর্কিড, কেকটাস বৃক্ষের পসরা সাজানো রয়েছে।

লিমন নার্সারির মো. আবদুর রব জানান, মেলায় বেচা-বিক্রি মোটামোমুটি ভালো। ১২ মাস ফলধরে এমন বারোমাসি লেবুসহ বিভিন্ন গাছ বিক্রি করেছেন তিনি। তাছাড়া ছোট জাতের চারা ১৫০ টাকা হেতে ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

সিলেট নার্সারি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা মলয় লাল ধর জানান, সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ক্রেতারা ফলজ ও ঔষুধি গাছের সঙ্গে শোভা বর্ধনকারী গাছ বেশি কিনছেন। এর মাঝে কেকটাস ও অর্কিড বেশী। দুই বছর করোনার কারণে মেলা বন্ধ ছিল এবং সিলেটের ভয়বহ বন্যায় পানি জমে নার্সারির বিভিন্ন গাছ নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে অনেক সময় লাগবে নার্সারি মালিকরা। এজন্য সরকারী সহযোগিতার বিকল্প নাই। তবুও আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, মেলা আয়োজন করা হলে মানুষের মধ্যে গাছ লাগানোর একটি মানসিকতা তৈরি হয়। এটি প্রকৃতির জন্য উপকারিও হয়ে ওঠে।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, মেলায় বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার বৃক্ষমেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আগামী শনিবার বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপনি অনুষ্ঠান হবে। এতে মেলায় অংশগ্রহণকারী নার্সারি মালিকদের মধ্য থেকে স্টল সাজানো এবং বিক্রির ওপর পুরস্কার প্রদান করা হবে।