বিনা ভোটে ২৭ চেয়ারম্যানসহ নির্বাচিত ১১৪

জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা ভোটে ২৭ চেয়ারম্যানসহ ১১৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন রোববার নির্বাচন কমিশন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন ৬৮ জন সাধারণ সদস্য ও ১৯ জন সংরক্ষিত সদস্য। বাকি পদগুলোতে ২ হাজার ২১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬৩ জন। এদিন চেয়ারম্যান পদে ৩২ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬৯ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৮ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন এসব তথ্য জানিয়েছে। জানা গেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় চেয়ারম্যান পদে ১৯টি জেলা পরিষদে একক প্রার্থী ছিলেন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় তা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়ায়। সর্বশেষ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭ জনে। তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের বাকি পদগুলোতে ১৭ অক্এখন ৩৪টি জেলা পরিষদে ৯০ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬২০ জন আর সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৫০৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব মিলে তিন পদে মাঠে রয়েছেন ২ হাজার ২১৫ জন।

এর আগে ২০১৬ সালে দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন, সাধারণ সদস্য ১৬৬ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬৯ জন বিনা ভোটে জয়ী হন। ওই বছর তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৩ হাজার ৯৩৮ জন।

যেসব জেলায় বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সেগুলো হচ্ছে-কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালপুর, ঝালকাঠী, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, ঢাকা, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, পাবনা, পিরোজপুর, ফেনী, বরগুনা, বরিশাল বাগেরহাট, ভোলা, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, শরীয়তপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন-রাজারহাট উপজেলার ৫নং ওয়ার্ডে জিনাত রেহানা, ফুলবাড়ী উপজেলার ৩নং ওয়ার্ডে মেহেদী হাসান, ১নং ওয়ার্ডের শাহাজান সিরাজ এবং মহিলা সংরক্ষিত পদে ৩নং ওয়ার্ডে ইদ্দত জাহান।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম-আওয়ামী লীগের একেএম ফজলে রাব্বী। সদস্য পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৪৯ জন। তিনজনের মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়। অবশিষ্ট ৪৬ জনের মধ্যে ৯ জন মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এর ফলে ১নং ওয়ার্ডে ফজলে রাব্বি ও ২নং ওয়ার্ডে ফারুক হোসেন সাধারণ সদস্য পদে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এখন সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা ৩৫।

অপরদিকে চারটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪ জন নারী সদস্য পদের জন্য ১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এদের মধ্যে ২ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ইসফাত আরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১৩ জন।

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলা আসনে একক প্রার্থী হিসাবে সাধারণ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এরা হলেন-ফকিরহাট উপজেলা আসনে সাধারণ সদস্য পদে ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ আব্দুর রাজ্জাক ও মোল্লাহাট উপজেলা আসনে সাধারণ সদস্য পদে মোল্লাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ওয়ালিউজ্জামান।

ভোলা প্রতিনিধি জানান, প্রত্যাহারের শেষ দিনে চেয়ারম্যান পদে আবদুল মমিন টুলু ও ১০ জন সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। সদস্য পদে ৩ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে ৭ জন সাধারণ সদস্য ও ৩টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে একক প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে রিটার্নিং অফিসার জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ১৭ অক্টোবর ভোটগ্রহণ হচ্ছে না। অর্থাৎ বিনা ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হচ্ছেন-আবদুল মুমিন টুলু এবং নির্বাচিত সদস্যরা হচ্ছেন-নজরুল ইসলাম গোলদার (ভোলা সদর), খায়রুল হাসান খোকন (দৌলতখান), নুরুল আমিন নিরব মিয়া (বোরহানউদ্দিন), মো. হাসান (তজুমদ্দিন), আনোয়ারুল ইসলাম রিপন (লালমোহন), মো. নুরুল ইসলাম (চরফ্যাশন), একেএম শাজাহান (মনপুরা)। নারী সদস্যরা হলেন-খাদিজা আক্তার, সাবিনা ইয়াসমিন ও কামরুন নাহার। আবদুল মমিন টুলু এবার নিয়ে তৃতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন।টোবর ভোটগ্রহণ করা হবে।