আফগানিস্তানে নারীসহ ১২ জনকে বেত্রাঘাত

আফগানিস্তানে হাজারও মানুষের সামনে তিন নারীসহ ১২ জনকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। আফগানিস্তানে এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তালেবান প্রকাশ্যে এমন সাজা কার্যকর করল।

বুধবার দেশটির একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে এ বেত্রাঘাত করা হয়। খবর বিবিসির।

তালেবানের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ব্যভিচার, সমকামী যৌনতা, ডাকাতিসহ নৈতিক অপরাধের দায়ে ১২ জনকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবানের প্রথম শাসনামলে বেত্রাঘাত-পাথর নিক্ষেপের মতো কঠোর শরিয়াহ আইনের সাজা কার্যকর ছিল। এখন তালেবান আবার পুরনো ধারায় ফেরার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

সবশেষ বেত্রাঘাতের ঘটনাটি ঘটে পূর্ব আফগানিস্তানের লোগার অঞ্চলে। সেখানকার তালেবান মুখপাত্র ওমর মনসুর মুজাহিদ বলেন, সাজা কার্যকরের পর তিন নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন পুরুষকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ঠিক কতজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

অপর এক তালেবান কর্মকর্তা বলেন, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ২১ থেকে ৩৯টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। একজনকে সর্বোচ্চ ৩৯টি বেত্রাঘাত করা হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে উত্তর আফগানিস্তানের তাকহার প্রদেশে একইভাবে বেত্রাঘাতের মাধ্যমে ১৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন নারী ছিলেন।

গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। পরে তারা সরকার গঠন করে। সরকার গঠনের পর তালেবান গত সপ্তাহে দেশটির তাকহার প্রদেশে প্রথমবারের মতো কঠোর শরিয়াহ্ আইন প্রয়োগ করে।

চলতি মাসেই দেশটির বিচারকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তালেবানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। বৈঠকে কিছু অপরাধের জন্য শরিয়াহ আইনে শাস্তি প্রদান করতে বিচারকদের নির্দেশ দেন তিনি।

আখুন্দজাদার নির্দেশনার পর তালেবানের এক মুখপাত্র বলেছিলেন— ডাকাতি, অপহরণ, রাষ্ট্রদ্রোহের মতো কিছু অপরাধের শাস্তি অবশ্যই ইসলামি শরিয়াহ আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী দিতে হবে।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন অপরাধীদের প্রকাশ্যে অঙ্গচ্ছেদ, পাথর ছুড়ে মারার মতো শাস্তি দেওয়া হতো। তখন এ নিয়ে কঠোর নিন্দার মুখে পড়ে তালেবান।

তবে গত বছর ক্ষমতায় এসে তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, অতীতের মতো তারা এবার দেশ শাসন করবে না।