টেবিলে চিরকুট, হোস্টেলের কক্ষে ঝুলছে চিকিৎসকের লাশ

পাশে চিরকুট রেখে মিনহাজুল করিম ভূঁইয়া নামে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন হোস্টেল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। 

এ সময় তার শরীরে অ্যাপ্রোন ছিল। নিজ কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখায় ঝুলছিল তার মরদেহ। টেবিলে পাওয়া যায় একটি চিরকুট। চিরকুটে লেখা ছিল— আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, আমি নিজেই দায়ী। 

ওই চিকিৎসক ২৪তম ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল আজাদ। 

চিকিৎসক মিনহাজের সহকর্মীরা জানান, বুধবার রাতে তার সার্জারি-১ বিভাগে নাইট ডিউটি ছিল। যথাসময়ে তিনি হাসপাতালে না এলে একাধিকবার তাকে কল করা হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি। রাত ৯টা পার হলে মোদাচ্ছের নামে এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে তার হোস্টেলে পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে তার কক্ষের দরজা বন্ধ দেখতে পান মোদাচ্ছের। দরজা ধাক্কা দিলেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না। এ সময় তিনি পাশের কক্ষের শিক্ষার্থীদের ডেকে আনেন। তারা জানালা দিয়ে দেখেন, অ্যাপ্রোন পরা অবস্থায় সিলিংফ্যানের সঙ্গে মিনহাজ ঝুলে আছেন। দ্রুত দরজা ভেঙে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু এর আগেই তিনি মারা যান।

কুমেকের প্রভাষক আবু নাঈম বলেন, মিনহাজ আমার ছাত্র ছিল। সে ছিল ২৪তম ব্যাচের। ছাত্রজীবনে একাধিকবার ফেল করায় তার মধ্যে মানসিক বিষণ্নতা ছিল। আত্মহত্যার পেছনে পুরনো বিষণ্নতার পাশাপাশি পারিবারিক কোনো কারণও থাকতে পারে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল আজাদ বলেন, একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর। কেন আত্মহত্যা করল তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তার পরিবারের লোকজন এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা করছি। 

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, যে কক্ষে মিনহাজের মরদেহ পাওয়া যায়, সেখানে তিনি একাই থাকতেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। তার মরদেহের ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।