তুরস্কে ‘গলাধাক্কা’ তহবিল তুলছে শরণার্থী বিরোধী দল

শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সঙ্গে পাঠানো হবে শরণার্থী সমর্থকদেরও। আর এজন্য টিকিট ভাড়া যাই লাগুক, দিতে প্রস্তুত তুরস্কের অতি ডানপন্থি ভিক্টরি পার্টি (জাফের)। ইতোমধ্যে শরণার্থীদের দেশে পাঠাতে অর্থ তহবিল গঠন করা শুরু করে দিয়েছে দলটি। এ যেন রীতিমতো গলাধাক্কা। আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন যুদ্ধ-সংঘাতপূর্ণ সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থআরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শরণার্থী ইস্যুতে সরকারের নমনীয় নীতিতে চটে তহবিল সংগ্রহে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন দেশটির কট্টরপন্থিরা। অনুদানের আহ্বানে ভিক্টরি পার্টি বলছে, ‘এই অর্থ শুধু শরণার্থীদের জন্য নয়, যারা শরণার্থীদের অধিকারকে সমর্থন করছে তাদেরও সিরিয়ার টিকিটের জন্য অর্থ প্রদান করা হবে।’ 

প্রচারের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কাদের তারা সিরিয়ায় ফেরত পাঠাতে চান এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে। উত্তরে তারা বলেছিলেন, শুধু শরণার্থীদের নয়, যারা তুরস্কে শরণার্থীদের অধিকার সমর্থন করে তাদের জন্য অগ্রিম টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে। ‘জাফের’ দলের প্রতিষ্ঠাতা উমিত ওজদাগ, টুইটারে পোস্ট করা একটি বার্তায় বলেন, ‘দামেস্কে একমুখী ভ্রমণের জন্য টিকিট বিক্রি সবেমাত্র শুরু করা হয়েছে।’ ভিক্টরি পার্টি ক্ষমতা লাভ করলে এক বছরের মধ্যে সব সিরীয় শরণার্থীকে বিতাড়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ প্রচারণায় অতিক্রম করেছে সীমাও। 

শরণার্থীপন্থি তুর্কি নাগরিকদেরও লক্ষ্যবস্তু করছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির স্বনামধন্য সাংবাদিক নাগেহান আলসিও। যারা শরণার্থীদের সমর্থন করেছে ওজদাগ তাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ অর্থাৎ অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তুর্কি সাংবাদিক আহমেত হামোকেও রাখা হয়েছে এই তালিকায়। তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে একটি বাসের টিকিট। এর আগেও শাসানো হয়েছিল হোমাকে। 

জাফর ক্ষমতায় গেলে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ওজদাগ সম্প্রতি ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। যার নাম ‘সাইলেন্ট ইনভেশন।’ যেখানে বলা হয় তুরস্কের কথিত ‘ডাইস্টোপিয়ান’ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সঙ্গে মানুষকে সতর্কও করা হয়। এই ভিক্টরি পার্টি প্রাথমিকভাবে শরণার্থীবিরোধী প্ল্যাটফরম হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দলের প্রচারাভিযান আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। তাদের লক্ষ্য মানুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা করা। আর এসব কাজকে স্বাভাবিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তুর্কির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুহাত সেনা আকসেনার বলেন, শিবিরে অনেক শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থী আছেন যারা পালিয়ে এসেছেন। তারা এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পুনরায় ফেরত যাওয়ার ভয়ে আছেন