বিদায় বললেন কেন সাফ জয়ী আনুচিং

আনুচিং মোগিনি। বয়স মাত্রই ২০ বছর। কিন্তু ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন সাফ জয়ী ফরোয়ার্ড । নেপথ্যে কারণ কী? দু’দিন আগের ঘটনা। শনিবার সকালেও অনুশীলন করেছেন যথারীতি। বিকালের টিম মিটিংয়ে তাকে বলা হয় ব্যাগ-পত্র গুছিয়ে নিতে। ক্যাম্প ছাড়তে হবে। শনিবার রাতেই উঠে পড়েন খাগড়াছড়ির বাসে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছোট্ট বার্তায় ফুটবলকে বিদায় বলে দেন আনুচিং মোগিনি। পোস্টে লেখেনÑ ‘আজকের পর থেকে ফুটবলকে বিদায়’। 

প্যারিস অলিম্পিকসের বাছাইয়ের বাংলাদেশ দলে জায়গা হয়নি আনুচিং ও সাজেদা খাতুনেদুজনের বাদ পড়ার প্রসঙ্গে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের খেলায় উন্নতির ছাপ নেই আগের মতো। 

তবে আনুচিং জানান, কোচের কাছ থেকে ওই মিটিংয়ে এ কথাগুলোই শুনতে চেয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমকে আনুচিং মোগিনি বলেন, ‘পারফরম্যান্স ভালো না হলে বাদ পড়বো, এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ফুটবলে এটা হয়ই। কিন্তু অনুশীলনে রানিংয়েও আমি ভালো করেছি। সকালেও অনুশীলন করলাম আর সন্ধ্যায় ডেকে নিয়ে শুধু বলা হলো ব্যাগ গুছিয়ে নাও, ক্যাম্প ছাড়তে হবে।’ 

আনুচিং বলেন, ‘কেন ক্যাম্প ছাড়বো, কেন বাদ দেওয়া হলো, তা নিয়ে কেউ কিছু বললো না। বাদ পড়ার কারণগুলো তারা বলতে পারত। তাহলে কোথায় উন্নতি করতে হবে, কোন দিক নিয়ে কাজ করতে হবে, সেগুলো বুঝতে পারতাম। কিন্তু তারা কোনো ব্যাখ্যা দিলো না, শুধু বলে দিলো চলে যাও।’

২০১৬ সাল থেকে জাতীয় দলের আক্রমণভাগে খেলা আনুচিং বলেন, ‘এর আগেও এগুলোই হয়েছে। আমি কারো নাম বলতে চাই না, কিন্তু সত্যি হচ্ছে, যাদেরকে ক্যাম্প ছাড়তে বলা হয়েছে, তাদেরকে আর কখনও ফিরিয়ে আনা হয়নি। তাদের বেলায় যেটা হয়েছে, আমার বেলায়ও সেটাই হলো। তাই অবসর নিয়েছি।’ 

সর্বশেষ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দলের সদস্য আনুচিং বলেন, ‘জীবনে স্বপ্ন ছিল ফুটবল খেলে পরিচিতি পাওয়ার, মাথা তুলে দাঁড়ানোর, পরিবারকে দেখভাল করার। সেটা কিছুটা করতে পেরেছি। কিন্তু সেই ফুটবলই আমাকে কষ্ট দিলো এভাবে। অনেকে বলছেন, আমি বিয়ে, সংসার করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওগুলো নিয়ে আমার তো কোনো ভাবনাই নেই। আমার স্বপ্ন ছিল শুধু ফুটবলকে নিয়ে।’ 

২০১৬ সালে প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেন আনুচিং। ২০১৯ সালে নেপালের বিরাটনগরের আসরে খেলা হয়নি তার। গত সেপ্টেম্বরে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে বাংলাদেশ। ওই দলে ছিলেন আনুচিংও। 

জাতীয় দল থেকে বিদায় নিলেও ক্লাব ফুটবল চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, আনুচিংয়ের। তিনি বলেন, ‘শীর্ষ স্থানীয় একটি ক্লাব থেকে ফোন করেছে তাদের হয়ে খেলার জন্য। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়। বুঝতে পারছি না কী হবে? কেননা, এখন জাতীয় দলে নেই এবং আপনারা জানেন জাতীয় দলে না থাকলে কোথাও দাম থাকে না।’