বিশ্বনাথ কলেজের প্রভাষকের উপর ডিম নিক্ষেপ করলো শিক্ষার্থীরা

সিলেটের বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক শংকু রানী সরকারের অপনসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৯দিন ধরে এমন উত্তেজনা বিরাজ করলেও কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেনা প্রশাসন। সর্বশেষ সোমবার প্রভাষক শংকু রানী সরকারকে গেট বন্ধ করে কলেজে প্রবেশ করতে দেয়নি আন্দোনকারি শিক্ষার্থীরা। তারা পরীক্ষা বর্জন ও অধ্যক্ষের অফিসসহ পুরো ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করতে তাকে। এছাড়াও বিক্ষোভ করে প্রভাষকের উপর ডিম নিক্ষেপ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের একটাই দাবি মানুষিক ভারসাম্যহীন ওই প্রভাষককে অসারণ করতে হবে।


খবর পেয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান ও থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান কলেজে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরে ইউএনও ও পুলিশের সহযোগীতায় প্রভাষক শংকু রানী সরকারকে কলেজ থেকে বের করে নেয়া হয়।


কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মানিক জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কলেজ ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠান ছিল। তখন প্রভাষক শংকু রানী সরকার তার প্রাইভেট কার নিয়ে কলেজে প্রবেশ করতে চান। এসময় ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলরা তাকে কলেজে প্রবেশ না করতে অনুরুধ করেন। কিন্তু শংকু রানী সরকার জুতা হাতে নিয়ে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বিষয়টি উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিসহ উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধান করলেও ওইদিন বিকেলেই প্রভাষক শংকু রানী সরকার বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আর ওই অভিযোগে আসামি রয়েছেন উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও অপর দু’জন প্রভাষকসহ ৮জন। অজ্ঞাতনামা রাখা হয়েছে আর ৫০/৬০জনকে।


ফলে ১ মার্চ থেকে শংকু রানী সরকারকে কলেজ থেকে অপসারণ দাবি জানিয়ে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সোমবার শংকু রানী সরকার কলেজে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে গেটে অবরুদ্ধ করে তার উপর ডিম নিক্ষেপ করেন।


জানতে চাইলে প্রভাষক শংকু রানী সরকার বলেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মানিক তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আর ওই টাকা না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।’ উপরের দিকে তার অনেক আতীয়স্বজনরা চাকুরি করেন। তিনি তাদের স্বরণাপন্ন হয়ে মামলা করবেন বলে জানান।


জানতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বদানকারী সিরাজুল ইসলাম রোকন বলেন, প্রভাষক শংকু রানী সরকার অধিকাংশ সময় কলেজে অনুপস্থিত থাকেন। আর কলেজে উপস্থিত হলে অশুভ আচরণ করেন। তাই তারা ওই প্রভাষকের অপসারণ দাবির আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।


ইউএনও নুসরাত জাহান বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেছেন আন্দোলন না করার জন্য। আর কলেজ শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করে তিনি মোবাইল ফোনে আঞ্চলিক পরিচালকের সাথে কথা বলেছেন। বিকেলে কলেজ শিক্ষকরা আঞ্চলিক পরিচালকের সাথে দেখা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানান।