ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ নিয়ে ঠেলাঠেলি

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গাড়ি থেকে ছিনতাই হওয়া টাকার কিছু অংশ উদ্ধারের পর ডিবি পুলিশ জানিয়েছিল, তারা প্রায় ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। তবে টাকা গণনার পর থানা পুলিশ দাবি করছে, উদ্ধার হওয়া টাকার প্রকৃত পরিমাণ ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে ডিবি বলছে, উদ্ধার হওয়া টাকার আসল পরিমাণ জানে উত্তরা বিভাগ পুলিশ। অন্যদিকে উত্তরা বিভাগ পুলিশ বলছে, টাকা যেহেতু ডিবি পুলিশ উদ্ধার করেছে, তাই তারাই জানে আসলে কত টাকা উদ্ধার হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে বেসরকারি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে বেশিরভাগ টাকা উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় হোটেল লা মেরিডিয়ানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, ‘ঘটনার ১০ ঘণ্টার মধ্যে ৯ কোটির বেশি টাকা উদ্ধার করেছি। বড় অংশই উদ্ধার করা হয়েছে।’

পরে রাতে টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সামনে উদ্ধার হওয়া তিনটি ট্রাঙ্ক খুলে ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পায় থানা পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, খোয়া যাওয়া চারটি ট্রাঙ্কের মধ্যে তিনটি ট্রাঙ্ক উদ্ধারের পর টাকা না গুনেই আনুমানিক ৯ কোটি উদ্ধারের কথা জানিয়ে দেয়ে ডিবি। পরে রাতে থানায় নিয়ে গণনার পর ট্রাঙ্কে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মিলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমরা টাকা উদ্ধারের পরপরই ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। আমরা টাকা উদ্ধার করেছি, কিন্তু গুনিনি। তাই টাকার সঠিক পরিমাণটা তারাই বলতে পারবেন।

এদিকে টাকার পরিমাণ নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান বলেন, টাকা উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। তাই এ বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, যে টাকাগুলো ডিবি পুলিশ উদ্ধার করেছে তা এখনও আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। উদ্ধার হওয়া টাকা থানায় রয়েছে। তবে পুলিশ গতকাল আমাদের সামনে টাকাগুলো গুনে ছিল। পুলিশের গণনা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে উদ্ধার হওয়ার টাকার পরিমাণ ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা‌।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, তিনটি ট্রাঙ্কের একটি খালি ছিল। বাকি দুই ট্রাঙ্কে ছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, সোয়া ১১ কোটি টাকাভর্তি চারটি ট্রাঙ্ক ছিনতাই হয়েছে। যেহেতু তিনটি ট্রাঙ্ক উদ্ধার হয়েছে, তাই বেশিরভাগ টাকা অর্থাৎ ধারণা করেই তাৎক্ষণিক প্রায় ৯ কোটি টাকা উদ্ধারের কথা জানান ডিবি প্রধান।