শাকিবকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন অপু-বুবলী!

সম্প্রতি ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে এক নারী প্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এই অভিযোগ থেকে তাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী। 

এর মধ্যে অপু সাবেক স্ত্রী হলেও বুবলী সাবেক না বর্তমান তা নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। তবে এ দুই চিত্রনায়িকাই শাকিবের দুই সন্তান জয় ও বীরের মা। তাই তো তাদের সন্তানদের বাবাকে অভিযোগ থেকে বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছেন তারা।

ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর সেটি সমাধানের জন্য অভিযোগকারী প্রযোজক রহমত উল্লাহর কাছে শাকিবকে নিয়ে যান তার সাবেক স্ত্রী অপু বিশ্বাস। তার উদ্যোগে ওই প্রযোজকের সঙ্গে ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠকে বসেছিলেন শাকিব। 

তবে অপুর এমন পদক্ষেপের পর পিছিয়ে নেই বুবলীও। নানাভাবে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছেন এ নায়িকা।

সবশেষ সোমবার শাকিবকে নিয়ে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বুবলী। এতদিন পর এ ইস্যুটি সামনে আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বুবলী। 

বুবলী তার স্ট্যাটাসে লেখেন— ‘শাকিব খান একজন অভিনয়শিল্পী যে কিনা প্রায় ২৪ বছর এই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছেন, অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সিনেমা নিয়ে ভেবেছেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ইস্যু এনে তাকে নিয়ে নানান বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

এ সময় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ও শুটিং চলাকালীন কিছু ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘অনেক বছর আগের অপারেশন অগ্নিপথ নামের একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব খানের ব্যাপারে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে প্রডিউসার দাবি করে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন। আচ্ছা শুটিং চলাকালীন এত এত অভিযাগ যখন টের পেয়েছিলেন উনারা, তা হলে কেন তখন তাকে বাদ দেওয়া হলো না? সমিতিগুলোতে অভিযোগ করা হলো না? দুপক্ষের কথা শোনা হলো না?’

তার পর ২০১৬ সালে অস্ট্রলিয়ায় শাকিবের জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘২০১৬ সালের অস্ট্রেলিয়ায় অপারেশন অগ্নিপথ শুটিংয়ের পর ২০১৮ সালে শাকিব খান তার সুপার হিরো নামের আরেকটি সিনেমার শুটিং সম্মানের সাথে প্রায় ২০ দিনে অস্ট্রেলিয়া থেকে শেষ করে আসেন। উনি যদি কোনো ব্যাপারে গিল্টি থাকতেন, তা হলে তো অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তাকে তখন শুটিংয়ের অনুমতই  দিত না। শাকিব খান নিজেও অস্ট্রেলিয়া যেতেন না।’

এ সময় অভিযুক্ত সেই নারী মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে কী করছিলেন প্রশ্ন তুলে আরও লেখেন, ‘মধ্যরাতে তার হোটেল রুমে নারী সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে এখন বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো— মধ্যরাতে তার হোটেল কক্ষে তিনি কি করছিলেন? সেদিন কি তার বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল? এ ছাড়া এত বছর কেন ওসব ঘটনা নিয়ে সেই নারী প্রকাশ্যে কথা বললেন না! এখন কেন এই প্রডিউসার দাবি করা ব্যক্তি অস্থির হয়ে গেলেন? আর দেশে হোক বা বিদেশে! যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে, খাতায় নাম উঠতেই পারে, কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, উভয় পক্ষের প্রমাণাদি নিয়ে।’

এর পর বুবলী তার স্ট্যাটাসের একদম শেষের দিকে আরও যুক্ত করেন, ‘কথা হলো— হঠাৎ এত অভিযোগের ভাণ্ডার কেন? কি চাচ্ছে? শিডিউল? মুভি শেষ করে দেওয়া? আমার জানামতে, শাকিব খান অপারেশন অগ্নিপথের শিডিউল কয়েকবারই দিয়েছেন, কিন্তু শুটিং হয়নি। এখনো যদি শিডিউল চাওয়া হয় সিনেমা শেষ করতে, উনি অবশ্যই শিডিউল দিবেন। কারন সে পেশাগত জায়গায় যথেষ্ট ডেডিকেটেড, তা না হলে ২৪ বছর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারতেন না। কারন একজন সফল শিল্পী একদিনে তৈরি হয় না।’

সবশেষ শাকিব খানকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি তার স্ট্যাটাসটি শেষ করেন। যেখানে তিনি লেখেন— ‘কয়েক বছর ধরে দেখছি, একটা চক্র কিছু দিন পর পরই শাকিব খানকে নিয়ে উঠেপড়ে লাগে। নানা চক্রান্তে মেতে ওঠে। বিষয়টা যেন এমন— তাকে হটিয়ে দিতে পারলেই আমরা রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্ত কখনই তা হতে দেয়নি। দেবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। মনে রাখবেন রাজা সবসময়ই রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্ত  কখনই তা হতে দেয়নি। দেবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। ’

গত ১৫ মার্চ শাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ জানান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহ।