রমজানে কেমন হবে লাইফস্টাইল

প্রায় সব বয়সীরাই রমজান মাসে সিয়াম সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চেষ্টা করেন। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার, পাপাচার, কামাচার এবং সেসঙ্গে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা। এক কথায় বলতে গেলে নিজের সংযম ধরে রাখা। তাই রোজার জীবনযাপনের ক্ষেত্রে একজন ফিটনেস পুষ্টিবিদ হিসাবে কিছু পরামর্শ থাকবে আপনাদের উদ্দেশ্যে। তিনটি বিষয়ের ওপর বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে এ সময়। যেমন-

 খাদ্য নির্বাচন-যেহেতু রমজানে আমাদের দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকতে হয়, তাই সেহেরি থেকে ইফতার পর্যন্ত এনার্জি ধরে রাখতে পারে এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে। শক্তিদায়ক খাবার আমরা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার থেকে পাই, তবে রোজায় কার্ব হিসাবে ধীরে ধীরে হজম করে এমন কমপ্লেক্স কার্ব গ্রহণ করতে হবে, যেমন-ওটস, লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত বা লাল চিড়া। প্রোটিনের ক্ষেত্রে সহজপাচ্য খাবার নিতে হবে যেন সেটি হজমে দেহের অতিরিক্ত পানি খরচ না করতে হয়, যেমন-মাছ, ডিম, দুধ, বাদাম, ছোলা, পনির, তরল ডাল এক্ষেত্রে বেশি গ্রহণযোগ্য। ফ্যাটের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যেন অসম্পৃক্ত চর্বি গ্রহণ করা হয়, যেমন-তেলযুক্ত মাছ, চিয়া সিড, ডিমের কুসুম ইত্যাদি। আর ট্রান্সফ্যাট অর্থাৎ একাধিক বার ব্যবহৃত তেল সম্পুর্ণ বন্ধ করা উচিত। গরমের মধ্যে রোজায় দেহের ভিটামিন, মিনারেলসের ভারসাম্য বজায় রাখতে পর্যাপ্ত আশযুক্ত ফল ও রঙিন শাকসব্জি গ্রহণ করা উচিত।

* দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ-গরমের সময় রোজা পালনের ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে; শরীর যেন পানিশূন্যতায় না পড়ে। ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের এ সময় অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। পানীয় খাবার যেমন- চিনি ছাড়া ফলের রস, স্যুপ, লাচ্ছি, পাতলা ডাল, ডাবের পানিও হতে পারে।

* শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম-অনেকের ধারণা রোজায় ব্যায়াম করা যায়না। এটি সম্পুর্ণ ভুল ধারণা। তবে হ্যা, রোজার ব্যায়াম হবে সাধারণ সময় থেকে ভিন্ন; এসময় দেহকে ঠান্ডা ও শান্ত রাখা বেশি প্রয়োজন, তাই রোজায় ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্যালরি খরচ না করে দেহের অভ্যন্তরীণ ফিটনেসের প্রতি জোর দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আপনাকে সাহায্য করতে পারে; একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু যোগাআসন বেশ কার্যকরি হতে পারে। যেমন- বঙ্গাসন, বায়ু মুদ্রা, বজ্রাসন, উজ্জীবন, আনুলোম-ভিলোম প্রাণায়াম খুবই ভালো কাজ করবে।

তাই রমজান মাসের জীবনযাত্রায় এ তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিন এবং পুরো রমজান মাস জুড়ে সুস্থতা নিশ্চিত করে আল্লাহপাকের ইবাদত করুন।