প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উৎপাদনে ঘাটতি নেই। উৎপাদনের জন্য যা যা দরকার সেটা করছি। বাজারে গেলে কোনও জিনিসের অভাব নেই। মনে হয় কৃত্রিম উপায়ে মূল্য বাড়ানো হয়, ইচ্ছে করে বাড়ানো হয়। অনেক সময় গোডাউনে রেখে দিয়ে কেউ কেউ এরকম খেলা খেলে। সরকার পদক্ষেপ নিলে কমে আসে।
বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা আরও বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেছি, বিশেষভাবে দেখার জন্য, কেন জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়বে। কৃষককে উৎপাদন খরচ দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি যেন না হয় সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছি। ধীরে ধীরে সেটা বাড়ানো হচ্ছে। টাকা ছাপানো হচ্ছে না। অনেকেই বলছেন, টাকা ছাপিয়ে টাকা ছড়ানো হচ্ছে। টাকা ছাপানো একদম বন্ধ করে দিয়েছি। টাকা ছাপানো হবে না।
ডলার সংকট দূর করার জন্য সরকারের গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডলারের বিনিময় হার যাতে নমনীয় থাকে, সেই পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন ইচ্ছেমতো এলসি খোলা যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন যাচাই করে এলসি খোলা হয়। আগে যেমন ইচ্ছে মতো কোনোটা অতিমূল্য, কোনোটা অবমূল্যায়ন করা হতো। সেটার আর সুযোগ নেই। এতে হয়তো কিছু ব্যবসায়ী বিপদে পড়ে যান। সেটা সঠিক বিপদ না, টাকা পাচারের সুযোগ কমে যায়। সেই জন্য কিছু চিৎকার কিছু দিন শুনেছি।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির নির্দেশে অধিবেশনের সমাপ্তির ঘোষণা করেন ডিপুটি স্পিকার অ্যডভোকেট শামসুল হক টুকু। ২৪তম অধিবেশন শুরু হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। এ অধিবেশনে ৯ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম কার্যদিবস শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে মুলতবি করা হয়। বাকি আটদিনে ১৮টি বিল পাস হয়েছে।
এ অধিবেশনে সরকারি ৩৫টি বিল উত্থাপিত হয়। এরমধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর পাস হয় দুটি বিল, ৫ সেপ্টেম্বর দুটি, ৯ সেপ্টেম্বর দুটি, ১০ সেপ্টেম্বর দুটি, ১১ সেপ্টেম্বর দুটি, ১২ সেপ্টেম্বর তিনটি, ১৩ সেপ্টেম্বর তিনটি এবং শেষ দিন ১৪ সেপ্টেম্বর দুটি বিল পাস হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত সাইবার সিকিউরিটি বিল-২০২৩ ও সংসদে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিল-২০২৩ বুধবারের অধিবেশনে পাস হয়েছে।
অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এবারের অধিবেশন শুরু হয়েছিল ৩ সেপ্টেম্বর। আজ ১৪ সেপ্টেম্বর অধিবেশন শেষ হচ্ছে। ১৮টি বিল এ অধিবেশনে পাস হয়েছে। এখন পাসের অপেক্ষায় রয়ে গেছে পাঁচটি বিল। আশা করি আগামী যে অধিবেশন হবে সেখানে সেটা আমরা করতে পারব।
সমাপনী বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। আমাদের মাতৃভূমিকে এমনভাবে গড়ে তুলি যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সাল নাগাদ উচ্চ অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংসদ সদস্যরা অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছেন
মন্তব্য