নিজস্ব প্রতিবেদক : সেলাইয়ের ভয়ে দর্জি দোকান থেকে ফিরে আসার শঙ্কায় শেষ মুহুর্তের জমজমাট হয়ে উঠেছে থান কাপড়েরর বেচাকেনা। ২০ রোজার পর দর্জিপাড়ায় অর্ডার রাখা বন্ধ হওয়ার কারণেই এর আগেই থান কাপড়ের ব্যবসা জমে উঠে। পছন্দের কাপড় দিয়ে জামা বানাতে না পারলে সব বৃথা যাবে। তাছাড়া রোজার শেষলগ্নে তাড়াহুড়ো করে তৃপ্তি মেটে না নিজের। সবদিক মাথায় রেখে যা-ই তৈরী করে পরেন না কেন আপনাকে থান কাপড়টা কিনতে হবে ১৫ রোজার আগে। এমন কথাই বলছেন সিলেট নগরীর থান কাপড়ের অন্যতম মার্কেট করিম উল্লাহর ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি শবে বরাতের পর থেকেই চলছে তাদের ব্যবসা। তবে ১০ রোজার পর থেকে ব্যবসা পুরোদমে জমে উঠে। নারী ও শিশুদের পোশাক তৈরীতে ব্যবহৃত থান কাপড়ের মার্কেট সিলেট নগরীতে একাধিক থাকলেও পাঞ্জাবি তৈরীর থান কাপড়ের স্পেশাল মার্কেট হাতে দুয়েকটা। তাছাড়া তরুণ-যুবক নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ধর্মীয় পোশাক পাঞ্জাবি। সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঞ্জাবীর থান কাপড় কিনতে বন্দরবাজার জামে মসজিদ মার্কেট, করিম উল্লাহ মার্কেট ও রংহমল টাওয়ারে ভীড় করছেন বেশীর ভাগ উঠতি বয়সি তরুণরা।
জাহিদ আহমদ নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, পাঞ্জাবি আমার পছন্দের পোশাক। সব ঈদে কাপড় কিনেই পাঞ্জাবি তৈরী করি। এবারো টিস্যু কাপড় আর একটি ইন্ডিয়ান সুতি কাপড় কিনেছি। করিম উল্লাহ মার্কেটের সাদাফ বস্ত্র বিতান, নিবরাস, বরকত বস্ত্রালয়, জাহিদ বস্ত্রালয়, আল আমিন বস্ত্রালয়, রফরফসহ একাধিক দোকান ঘুরে দেখা গেছে পাঞ্জাবির থান কাপড়ের মধ্যে সুতি, টরে, মাইক্রোসহ বিভিন্ন রকমের কাপড় রয়েছে। বাংলা আদি কাপড়ের গজ ১২০-১৪০ টাকা এবং বাংলা সুতি ১২০-২৪০টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়ান আদি ২০০/২২০, ইন্ডিয়ান সুতি ২০০/২৫০টাকা, পাকিজা ও শাটন প্রিন্ট ১৫০/২০০টাকা। এছাড়াও প্রকার ও মান ভেদে দামে কমবেশ পরিলক্ষিত হয়।
এদিকে তুব, জুব্বা, মাদানী পাঞ্জাবী তৈরীতে অধীক ব্যবহৃত ব্যবহৃত টরে কাপড় ১২০ টাকা থেকে শুরু ৫৫০টাকা পর্যন্ত গজ প্রতি বিক্রি হতে দেখা গেছে। টরে নরমাল ১২০/১৫০ প্রেসিন্ডেট টরে ২০০/২৫০, টরে টেট্রেক্স ৩৫০/৪০০, জাপানি টরে ৫৫০/৬০০ টাকা গজে বিক্রি হচ্ছে। মাইক্রো কুরিয়ান ২০০/২৫০, জাপানি ৫০০/৫৫০, সুইজ মাইক্রো ৩৫০, ইন্ডিয়া ব্রাসো ২৫০/৩০০টাকা। ইন্ডিয়ান কেটালক প্রকার ও মানভেদে ৮শ’ টাকা ১৫শ’ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। জাপানি সুতি ৫শ’ টাকা, জাপানি চিকেন ৫৫০/৬০০, ইন্ডিয়ান চিকেন ৩৫০/৪০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবির কাপড় কিনতে আসা শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা সায়েম খাঁন বলেন, ভাবছি শার্ট-প্যান্ট বাদ দিয়ে পাঞ্জাবি পরিধান শুরু করবো। এই প্রথম থান কাপড় কিনে তিনি পাঞ্জাবি বানাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন।
রংমহল টাওয়ারের আফরায় পাঞ্জাবি সেলাই করাতে আসা জসিম শিকদার নামের টেলিকম ব্যবসায়ী বলেন, পাঞ্জাবির প্রতি তরুণদের ঝুঁক বাড়িয়েছেন যুব নেতা এবং তরুণ আলেম ব্যবসায়ীরা। থান কাপড়ের ব্যবসা জমে উঠেছে। তারাবির নামাজের পর দম ফেলার ফুরসত নেই জানিয়ে বরকত বস্ত্রালয়ের পরিচালক মো. বুকাইর আহমদ বলেন, বিকিকিনি ভালোই চলছে। গতবারের তুলনা কিছুটা ভালো বলা যায়। ক্রেতারা বেশি কোন ধরণের কাপড় কিনছেন জানতে চাইলে করিম উল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী সাদাফ বস্ত্র বিতানের পরিচালক মাওলানা আবু সুফিয়ান বলেন, গত কয়েক বছর থেকেই পাঞ্জাবির তরুণ আর উঠতি বয়সি কিশোরদের ঝুঁক পড়েছে। টিস্যু সুতিতেই হাত দিচ্ছে তারা। সাথে হরেক রকমের কারুকাজ করা ক্যাটালকের কাপড় কিনছেন।
মন্তব্য