হাঁটুব্যথা নিরাময়ে নিয়মিত হাঁটুন

লাইফস্টাইল ডেস্ক : রাস্তায় চলতে চলতেও হঠাৎ হয়তো চোট লেগেছে পায়ে। ব্যথায় হয়তো হাঁটতে পারছেন না। আপনি জানেন কি নিয়মিত হাঁটা আপনার হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তি দেবে। পুরুষদের তুলনায় হাঁটুব্যথায় নারীরাই আক্রান্ত হন বেশি। এর একাধিক কারণ রয়েছে। মহিলাদের ৪৫ বছর বয়সের পর ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মেয়েদের হাড়ে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। নারীদের মধ্যে যারা বাড়িতে বসে কাজ করেন, তাদের তো বটেই, এমনকি যারা মাঠে কাজ করেন, তাদেরও অনেক সময়ে হাঁটু মুড়ে কাজ করতে হয়। ফলে হাঁটুতে হাড়ের সংযোগস্থলে চাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। দিনের পর দিন হাড়ের সংযোগস্থল অর্থাৎ হাঁটুতে চাপ পড়ায় তার ক্ষমতা কমে যায়। তার থেকেই নারীদের এখানে ব্যথার সৃষ্টি হয়। হাঁটুব্যথা কেন হয়? বিভিন্ন কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে। তার মধ্যে বয়সজনিত কারণেও হাঁটুব্যথা হয়ে থাকে। হাঁটুতে থাকে একধরনের তরল পদার্থ। বয়স হলে সেই তরল কমে যায়। সেই থেকেই ব্যথা অনুভব হওয়া শুরু। বয়স হলে মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় আবার রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হাঁটুব্যথা শুরু হয়ে থাকে। বয়সজনিত কারণ ছাড়া চোট-আঘাত লেগেও ব্যথা হয় হাঁটুতে। চোট লাগলে অনেক সময় লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। বহু রোগী সেই রোগের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করান না। ফলে পরে হাঁটুর সমস্যায় ভুগতে হয় তাদের। এ ছাড়া স্পন্ডালাইসিস থেকেও হাঁটুব্যথা হতে পারে। হাঁটুব্যথা হলে কী করবেন? এখন আমরা শরীরে কোথাও কোনও ব্যথা হলে সহ্য করতে পারি না। আমাদের সহ্যক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই হাঁটুব্যথা হলে আমরা পাড়া কিংবা বাড়ির আশপাশের ওষুধের দোকানে ছুটে যাই। ব্যথার ওষুধ খেয়ে সাময়িকভাবে রোগ থেকে মুক্তি পাই। তবে তাতে আমাদের আরও ক্ষতি হচ্ছে। তাই হাঁটুর মতো গুরত্বপূর্ণ স্থানে ব্যথা অনুভব হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে। ব্যথার ওষুধ বেশি খেলে আবার কিডনির সমস্যা হতে পারে। এমনকি, হতে পারে আলসারও। তবে সব থেকে ভাল দাওয়াই হল ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটুর ব্যথা হলে পা লম্বা করে একবার শক্ত এবং একবার ঢিল দিতে হবে। এমন করলে হাঁটুর হাড়ের শক্তি বেড়ে যায়। হাঁটুব্যথা থেকে কি পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব? দুটি কারণে হাঁটুব্যথা হয়ে থাকে। বয়সজনিত কারণে হাঁটুব্যথা হলে সহজে দূর করা যায় না। তবে দুর্ঘটনাজনিত কারণে হলে তা কতটা মারাত্মক সেটা দেখে বলা যায় তা পুরোপুরি ঠিক হবে কিনা। তবে ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবং সেটা সম্ভব সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে। প্রয়োজনে নতুন করে হাঁটুর হাড় প্রতিস্থাপনও করা যায়। লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে তা-ও মেরামত করা যায়। লিগামেন্টের সমস্যা হলে হাঁটার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। সেই রোগের চিকিৎসা মালদহ মেডিকেল কলেজেই করা সম্ভব। এ ছাড়া বয়স্কদের ব্যথাও নিয়ম মতো চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে সারানো সম্ভব। তবে একই সঙ্গে অবশ্য মানুষের জীবনযাত্রাতেও বদল আনতে হবে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা