সুনামগঞ্জে অনিয়মের বন্দি ব্রিটিশ সড়কের নির্মান কাজ

সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে ব্রিটিশ সড়কের রাস্তার কাজ নিয়ম অনিয়মের বেড়াজালে বন্দি হয়ে আছে। কাজের শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ আসছে বার বার। সোমবার রাস্তার ঢালাই সহ বিভিন্ন কাজের অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়দের সাথে ঝগড়া বাঁধে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের। কাজ সঠিক ভাবে না হওয়া পর্যন্ত ঢালাই কাজ বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে দেখা যায় রডের লিপিং ৫০ টার মাঝে ২৫ টা, দু পাশে ১ ফুট করে লিপিং নাই। আর সি সি ৮ ইঞ্চি ঢালাই করার কথা থাকলেও ৫ থেকে সাড়ে ৫ ইঞ্চি ঢালাই করে করে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। পাকা শক্ত করার মেডিসিন দেওয়ার কথা থাকলেও মেডিসিন ব্যবহার করছে না তারা। দোয়ারা বাংলাবাজার সড়কের ব্রিটিশ পয়েন্ট হয়ে বালিউড়া পর্যন্ত উপজেলার দীর্ঘ দিনের জরা জির্ন ব্রিটিশ সড়কটি ৩ টি ইউনিয়নের জনগনের চলা চলের একমাত্র রাস্তা হওয়ার পরও ঠিকাদারী প্রতিষ্টান একের পর এক অনিয়ম করে আসছে।

দীর্ঘদিন পর গত বছর সড়কটির কাজের বরাদ্ধ দেয়া হয় প্রায় ২২ কোটি টাকা। কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় গত বছরের ২০ অক্টোবর। সরকারি কোন নিয়ম মানছেনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছালেহ ইসলাম লক্ষিপুর-ফরিদপুর কনষ্টাকশন। এই কাজের ডিজাইন অন্যুায়ী কোন কাজ করা হচ্ছেনা, কাজের অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়রা কথা বললে চাঁদাবাজি মামলা ও র‌্যাবের ভয় ভিতি দেখায় ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের লোকজন। মাঠি মিশানু বালু ও ময়লা পাথর পানি দিয়া পরিষ্কার না করে ঢালাই করছে। এ নিয়ে কথা বলতে স্থানীয়দের গোপালনগর ও ফাজিলপুর এলকার ৩০২/৭ নম্বর পিলার পর্যন্ত দু’ধারে প্রায় ৪১৬টি ক্লিপ নেই। এমনকি দু’টি লাইনের সংযুক্ত স্থানেও ক্লিপ গায়েব হয়ে গেছে।

এলাকার রেলপথে স্লিপার সমূহে নাট-বল্টু দিয়ে রেল লাইন আটকানো থাকার কথা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ক্লিপ, নাট-বল্টু নেই। রেলপথ থেকে এসব যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ায় অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়ছে। দিনের পর দিন ক্লিপ-হুক, নাটবল্টু, ফিশপ্লেট চুরি হওয়ায় সেকশনটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ট্রেন চলাচলেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। চুরি যাওয়া ওসব যন্ত্রাংশ দ্রুত লাগানোর নিয়ম থাকলেও বছরের পর বছর তা লাগানো হচ্ছে না। এদিকে ৭ মে রাতে সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের শমশেরনগর রেল স্টেশনের অদূরে দক্ষিণ পাশে ৩০৬/২ নম্বর রেলপথ বাঁক এলাকায় রেলপথের পাতে ফাটল দিয়ে বারো ইঞ্চি ফাঁক তৈরি হয়। এতে ট্রেনের বড় ধরণের দুর্ঘটনার ক্ষেত্র তৈরি হয়।

এ সময়ে এক স্কুল শিক্ষার্থীর সচেতনতায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে যাত্রীবাহী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন রক্ষা পায়। কমলগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুস শহীদ, সমাজকর্মী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অতীতে ট্রলিযোগে প্রকৌশলী বিভাগের লোকজন নিয়মিত রেলপথ রক্ষণাব্বেণ কাজের জন্য রেলপথে ঘুরে বেড়াতেন। তাছাড়া শ্রমিকদেরও রেলপথ, কালভার্ট, ব্রিজে কাজ করতে দেখা যেতো। প্রতিনিয়ত সংস্কার কার্যক্রম পরিলক্ষিত হলেও বর্তমানে এচিত্র চোখে পড়ে না।

এখন রেল সেকশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূর্র্নীতি গ্রাস করেছে। তারা আরও বলেন, স্টেশন সমুহে টিকিট বিক্রিসহ নানা বাণিজ্য নিয়ে মাস্টারসহ অন্যান্যরা ব্যস্ত থাকেন। ফলে ট্রেন, রেলপথ ও কালভার্ট-ব্রিজে কোন সমস্যা আছে কি না সেটি তাদের কাছে মুখ্য নয়। মানুষের জীবনের চেয়ে টাকা কামানোটাই মুখ্য। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে কুলাউড়াস্থ রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী মনিরুল ইসলাম বলেন, ভানুগাছ স্টেশনের আউটারে একটি বেইলী ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। কাজ চলছে দশ, বারো দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তাছাড়া হুক, ক্লিপ না থাকা স্থান সমুহে ও কাজ করা হচ্ছে। তবে রেলপথ এখন স্বাভাবিক ও সমস্যাযুক্ত স্থানে কাজ চলছে বলে তিনি দাবি করেন।