জীবন রাঙাই কোরআনের রঙে

আজ পহেলা রমজান। রহমতের প্রথম দিন। দয়াময় মালিকের অফুরন্ত রহমত পেতে আমাদের বেশি বেশি তার সন্তুষ্টির বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে। আল্লাহর অপার অনুগ্রহ প্রাপ্তির অন্যতম প্রধান মাধ্যম আল কোরআন। ইতিহাস সাক্ষী, রুক্ষ মরুর পাষণ্ড মনের আরবীয় জাহেলদের সভ্য আর উন্নত বানাতে পেরেছিল এই কোরআন। সে সময়ের পরাশক্তি রোম আর পারস্য সাম্রাজ্য পদানত করার অন্যতম মূল হাতিয়ার কোরআন। আল কোরআনই অন্ধকারে আলো জ্বালে, অমানুষকে মানুষ বানায়,পথহারাকে পথের দিশা দেয়। কোরআন পড়ে এই সাড়ে চৌদ্দ’শ বছরে কত পথহারা বনী আদম যে পথের সন্ধান পেয়েছে, রঙহীন জীবনে রঙ এনেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। প্রিয় পাঠক! রমজান এসেছে সওগাত নিয়ে, রমজান এসেছে রহমত নিয়ে। রহমত লুফে নিতে সঙ্গী বানাতে হবে মহা গ্রন্থ আল কোরআনকে। যদি আপনি হাফেজ হয়ে থাকুন তাহলে খতমের পর খতম দিতে থাকুন। যদি আপনি শুদ্ধভাবে কোরআন পড়তে জানেন তাহলে পুরো রমজানে এক খতম কোরআন পড়ার চেষ্টা করুন। যদি আপনার পড়া শুদ্ধ না থাকে তাহলে পণ করুন এই রমজানেই কোরআন শুদ্ধ করবেন যে কোন মূল্যেই হোক। আর প্রতিদিন নির্জনে কোরআন নিয়ে বসুন। কোরআনের প্রতিটি লাইনের নিচে হাত রেখে বলুন, হে আল্লাহ! আপনি যা বলেছেন নিশ্চয় সব সত্য বলেছেন। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় আল্লাহর সামনে নিজেকে এভাবে পেশ করুন যে, কোরআন শিখতে না পারায় আমি লজ্জিত, তবে কোরআনের ভালবাসায় আমার মন সদা টইটুম্বুর। পবিত্র কোরআন শরীফে মহা গ্রন্থ আল কোরআন সংক্রান্ত ২৮ টি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। এই আয়াতগুলোতে কোরআন কি, কেন,কাদের জন্য নাযিল হয়েছে? সব উত্তর আছে। সংক্ষিপ্ততার জন্য শুধু বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি আয়াতের বঙ্গানুবাদ পেশ করা হচ্ছে। আল কোরআনের পরিচয়: ‘ইহা এমন এক গ্রন্থ, যার মধ্যে কোন সন্দেহ -সংশয়ের অবকাশ নেই; খোদাভীরুদের জন্য এ গ্রন্থ পথনির্দেশ’। ( সূরা বাক্বারা, আয়াত নং ২) আর আমি অবতীর্ণ করেছি কোরআন,যা মুমিনদের (বিশ্বাসী) জন্য সুচিকিৎসা ও দয়া,আর তা সীমালঙ্ঘনকারীদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। ( সূরা ইসরা, আয়াত নং ৮২) ‘এবং নিশ্চয়ই এটা (আল কোরআন) মুমিনদের জন্য হেদায়েত ও রহমত। (সূরা নামল, আয়াত নং ৭৭) বস্তুত: যে কোন অবস্থাতেই তুমি থাক এবং কোরআনের যে কোন অংশ থেকেই পাঠ কর কিংবা যে কোন কাজই তোমরা কর তখন আমি তোমাদের কাছে থাকি যখন তোমো তাতে আত্মনিয়োগ কর। (সূরা ইউনুস, আয়াত নং ৬১) প্রিয় পাঠক! রমজান এসেছে আল্লাহকে পাওয়ার অফার নিয়ে তার অবারিত রহমতের বর্ষণে স্নান করাতে। তাহলে আর দেরি নয়। আসুন, কোরআন হাতে এখনই বসে পড়ি এবং মাওলায়ে কারীমকে তালাশ করি। আল কোরআনকে সঙ্গী করে আশা করি পথের দিশা পেয়েই যাব, ইনশাআল্লাহ।