সিলেট ছাত্রলীগে এক হলেন না আওয়ামী লীগ নেতারা

গত বছরের ১২ই অক্টোবর সিলেটে ছাত্রলীগের জেলা ও মহানগর শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কমিটি ঘোষণার পর থেকে নানা নাটকীয়তা ঘটে সিলেটে। না জানিয়ে কমিটি দেয়ায় নাখোশ হন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিশেষ করে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চার নেতা বেঁকে বসেছিলেন। ছাত্রলীগকে সমঝে নিতে প্রথম দিকে রাজি হননি তারা। পরে অবশ্য সমঝে নেন। কিন্তু ছাত্রলীগ নিয়ে এখনো এক হতে পারেননি আওয়ামী লীগ নেতারা। এর প্রমাণ মিললো গত শুক্রবারের ছাত্রলীগের শোকসভার অনুষ্ঠানে। প্রধান অতিথি হয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন এক সময়ের সিলেট আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ)  শফিউল আতবে- এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে দাওয়াত পেলেও যাননি সিলেটের নেতারা। জেলা ও মহানগর নেতাদের মধ্যে জেলার সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, সুজাত আলী রফিক, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিমসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। সিলেট আওয়ামী লীগের মধ্যে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এই চারজনের মধ্যে কেউ-ই অনুষ্ঠানে যাননি। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- মহানগর সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি টিম টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থান করছে। বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে তারা টুঙ্গিপাড়ায় যান। এ কারণে তারা সিলেট ছাত্রলীগের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। যারা সিলেটে ছিলেন তারা যোগ দিয়েছেন। তবে- সিলেটেই অবস্থান করছিলেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান। তারা জানিয়েছেন- পূর্বে থেকে নির্ধারিত অন্য অনুষ্ঠান থাকার কারণে শোকসভায় যেতে পারেননি। তবে- সন্ধ্যায় তারা সার্কিট হাউজে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের উন্নয়ন সম্পর্কিত সভায় যোগ দিয়েছেন। সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- দ্বন্দ্ব সিলেট ছাত্রলীগে নয়। মূলত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীকে ঘিরে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন; প্রায় ১১ মাস আগে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের যখন ঘোষণা করা হয়, তখন আওয়ামী লীগ নেতাদের মতামত নেয়া হয়নি। তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করেই জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। আর এতে ভূমিকা রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। 

যার কারণে কমিটি ঘোষণার পর সিলেট ছাত্রলীগের তেলীহাওর গ্রুপে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয়। এখনো তেলীহাওর গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতারা তাদের বলয়ের নেতা জেলার সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজকে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেননি। জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের নির্দেশে রাহেলের সঙ্গে বলয় নেতাদের বিরোধের দূরত্ব কমে এলেও সম্প্রতি সময়ে ফের নিজেদের মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। আর দ্বন্দ্ব নিয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সিলেট ছাত্রলীগের নেতারা জানিয়েছেন- কমিটি ঘোষণার এক বছর হতে চললেও জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এর বাইরে জেলা ও মহানগরের আওতাধীন ইউনিটগুলোতেও এখনো পুরোদমে হাত দেয়া যায়নি। সিলেট ছাত্রলীগ ইস্যুতে আওয়ামী লীগ নেতারা এক না হওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে এই কাজ শুরু করতে সিলেট ছাত্রলীগের চার নেতা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বলে জানান জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা।লম চৌধুরী নাদেল।