প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকের এ উত্তরণের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। দেশের ভেতরে-বাইরে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে। সে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত আছে। কাজেই আমাদের সবাইকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশবিরোধী সব অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুবর্ণজয়ন্তীর এই শুভক্ষণে আমাদের শপথ নিতে হবে কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। দেশের গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে। আসুন, সব ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তুলি।’
তিনি বলেন, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জন করেছি। প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ছাত্রছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে, শ্রমিক কারখানা ছেড়ে, কৃষক লাঙল ফেলে, কামার, কুমার, জেলে তাদের কাজ ফেলে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাঙালি সদস্যরা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে প্রতিরোধ সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একবার ভাবুন, আমরা আজ যে স্বাধীন দেশের মাটিতে মুক্ত নিশ্বাস ফেলছি তা অর্জনে কত শত তরুণ অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন? কত মা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, কত বাবা তাদের পুত্র হারিয়েছেন, কত ভাইবোন তাদের ভাই হারিয়েছেন, কত স্ত্রী তাদের স্বামী হারিয়েছেন, সন্তানরা বাবা হারিয়েছেন? কতশত মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু হয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন? তাদের একটাই প্রত্যাশা ছিল এ দেশ স্বাধীন হবে। এ দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। সবাই মৌলিক অধিকার ভোগ করবে। আজকে আমরা তাদের সেই প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি আমরা। তবে এই উদযাপন যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ না থাকে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে হবে আমাদের।
মন্তব্য