‘পরগাছাদের ভিড়ে আসল গাছ সামনে আসতে পারে না’

‘এখন তো গাছের পাতায় পাতায় আওয়ামী লীগ। পরগাছা কখনো কাজে লাগে না।

পরগাছারা যেভাবে ঝাঁকিয়ে বসছে তাতে আসল গাছ আর সামনে আসতে পারে না। মানুষ এখন চাল, ডাল, তেল খেয়ে পড়ে ভালো আছে। যদি খেয়ে পড়ে ভালো না থাকতো তাহলে অনেকের কথায় মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তো। মানুষের পেটে যখন ক্ষুধা লাগে রাজপথে তখনি মানুষ নামে। পেট যখন ভরা থাকে, মানুষের সমস্যার যখন সমাধান হয় তখন যত শক্তিই ডাকুক তারা সেই শক্তির পক্ষে কথাও বলে না ও যায় না। জনগণের মনের কথা ও ভাষা যারা বুঝে তারাই রাজনীতি করতে পারে’।

রোববার (১৪ নভেম্বর) দুপুর বন্দরের নবীগঞ্জের সিএসডি ক্যাম্পাসে নারায়ণগঞ্জে আধুনিক ও বড় আকারের খাদ্যগুদাম নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর ও কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এ কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, ১৯৮১ সালে যেদিন জাতির পিতার কন্যা ৩১ বছর বয়সে দেশে ফিরে এসেছিলেন এত মানুষ সেদিন কোথায় ছিল। এখন সর্বস্তরে দেখি আমাদের উপদেশ দেয়, দিক-নির্দেশনা দিতে চায়। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে ৮১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত ৪৯টা ছেলের মরদেহ মাটিতে দাফন করেছি। ৯৫ থেকে ১ বছরে ১২ জনকে জীবন দিতে হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য। স্লোগান দিয়েছিল শুধু একটা জয় বাংলা। আমার ছোট ভাই মনির ২১ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল তার বুকের মধ্যে গুলি করা হয়েছিল। পাপ্পুকে হত্যা করা হয়েছিল চাষাঢ়ার রাস্তার মোড়ে। সেদিন পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল। আমরা রাজপথে ছিলাম। আমরা কারো বিরুদ্ধে স্লোগান দেইনি। সেই লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় লাশের ওপর গুলি করা হয়েছিল। সেই লাশ নামিয়ে ৭৫টি ছিটা গুলি আমরা বের করেছিলাম। দাফন করতে পারিনি কবরস্থানে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের মসজিদের পাশে গিয়ে দাফন করা হয়েছিল তাকে।

তিনি বলেন, এখানে কি গোডাউন হবে, কি চাল হবে আমি জানি না। একটা কথা জানি এই শেখ হাসিনা আপনাদের মধ্যে তার পরিবার খুঁজে বেড়ান আর তাই তার কাছে এই দেশ নিরাপদ। ক’দিন আগে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা হয়েছে। সামনে অনেক বড় পরীক্ষা আমাদের হয়তো দিতে হবে। সবাই বলি আপা আছে। সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য কিছু দরজা রাইখেন কারণ সামনে তারাই থাকবে তারাই রক্ত দেবে রাজপথে থাকবে।

পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আটটি সাইলো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ৪৮ হাজার মেট্রিক টনের সাইলো নির্মাণ হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। যত অর্থই থাকুক ক্ষুধা থাকলে মানুষের আর কিছু ভালো লাগে না। ক্ষুধা কাকে বলে তা স্বাধীনতার আগে আমরা বুঝেছিলাম। শামীম ভাই যেভাবে আবেগ গিয়ে বলেছেন সেভাবে আমরা বলতে পারি না। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আমরা শক্তিশালী করবো এটাই আমাদের কাজ। যার যার জায়গা থেকে যতটুকু করার আছে ততটুকুই করতে হবে। আমি যে এলাকার এমপি সেখানেও ইউপি নির্বাচন হয়েছে। প্রশাসন যেভাবে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছে তা প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, আমাদের সবার ঠিকানা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা আছে বলেই আমরা আছি। সব দুঃখকে জয় করে শুধু দেশ ও দেশবাসীর জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। কোন সম্প্রদায় নেই যাদের প্রতি তার নজর নেই। একটি দল বলেছিল করোনায় ২ লাখ লোক না খেয়ে মারা যাবে, আমি খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি একটি মানুষও না খেয়ে মরেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কাজ করে এটি সম্ভব হয়েছে। , ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়েছি। এখন পুষ্টিযুক্ত খাবার নিয়ে কাজ করছি।

তার বক্তব্যের শেষের দিকে শামীম ওসমান তার কাছে এসে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে আর তাই তিনি এটি নিয়ে কাজের অনুরোধ করেন। মন্ত্রী বিষয়টি ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে জেনে কাজ শুরু করবেন বলে ঘোষণা দেন।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, খোলা আটা ১৮ টাকা কেজি বিক্রি করছি বাজারে। এগুলো আমরা ২ কেজি করে প্যাকেট আটা বিক্রি করবো। আর কাউকে খোলা আটা খেতে হবে না।