মৌলভীবাজারে ছুটি শেষ হলেও খুলছে না অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ধীরগতিতে নামছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ। দীর্ঘ ১ মাস ধরে উপজেলার দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ৪৮টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ সহস্রাধিক বানভাসি দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে রোববার প্রাইমারি স্কুল ও বুধবার মাধ্যমিক স্কুল খুলছে। কিন্তু এখনো অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি থাকায় ও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় সেগুলোতে অন্তত এক সপ্তাহের মধ্যে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হবে না।

জানা গেছে, ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে রোববার প্রাইমারি স্কুল ও বুধবার মাধ্যমিক স্কুল খুলছে। কিন্তু উপজেলার হাকালুকি হাওড়পাড়ের বর্নি, সুজানগর ও তালিমপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এখনো বন্যার পানি নামেনি। উপজেলা প্রশাসন বানভাসিদের জন্য যেসব বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সেগুলোর শতভাগই সরকারি প্রাইমারি স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুল। বন্যার পানি অত্যন্ত ধীরগতিতে নামায় আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারাও তাদের বাড়িতে ফিরতে পারছে না।

সরেজমিনে সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিন্তাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়থল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতদের থাকতে দেখা গেছে।

ভোলারকান্দি গ্রামের আশ্রিতরা জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বাড়িঘরে ফিরে যাওয়ার মতো অবস্থা এখনো তাদের হয়নি। আরও কয়েক দিন বৃষ্টিপাত না হলে তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন।

হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র দাস জানান, তার স্কুলে প্রায় ১ মাস ধরে ৭২ পরিবার বসবাস করছে। ২-৩টি পরিবার বাড়ি ফিরতে পেরেছে। বাকিদের ফিরতে আরও ৫-৭ দিন লাগতে পারে। দুর্গতরা স্কুল না ছাড়লে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়।

ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাস চন্দ্র দাস জানান, তার স্কুলে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতদেরও বাড়িঘর থেকে এখনো বন্যার পানি নামেনি, তাই তাদের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেই।

এদিকে আগামী বুধবার স্কুল খুলবে। বন্যাদুর্গদের স্কুলে রেখে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা মোটেও সম্ভব হবে না। এছাড়া সালদিগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাটনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো পানিবন্দি থাকতে দেখা গেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এসএম মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঈদের ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে রোববার স্কুল খুলছে। হাকালুকিপাড়ের তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত। বেশ কয়েকটিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গতরা এখনো আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়েনি। রোববার স্কুল করা যায় কিনা তা সরেজমিন তিনি পরিদর্শন করেছেন।